৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

শাজাহানপুরে সুমাইয়ার নি’হতের ঘটনায় পুলিশি তদন্তের অপমৃ’ত্যু

spot_img

বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায় চাঞ্চল্যকর সুমাইয়া আক্তার(৩২) রহস্যজনক ভাবে নিহতের ঘটনায় পুলিশের তদন্তেরও অপমৃত্যু হয়েছে। আড়িয়া ইউনিয়নের রহিমাবাদ শালুকগাড়ি গ্রামে পুকুরপাড় এলাকায় অহেদ আলী(৭০)’র ভাড়া বাড়িতে ২৫জুন সকালে ঘরের তীরের সাথে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয় সুমাইয়ার। আরো ২দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলছে পুলিশ।

লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করা অফিসার এবং থানার ওসি পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। সুমাইয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আর সুরতহাল প্রতিবেদনে লাশের প্রকৃত তথ্য গোপন করে পুলিশ তদন্তেরও অপমৃত্যু হয়েছে বলছেন তাঁরা। পুলিশের সুরতহালের স্বাক্ষী এবং লাশ নামানো কাজে পুলিশকে সহায়তা করা ব্যক্তিরাও বলছেন সুরতহালে লাশের তথ্য গোপন করা হয়েছে।

গত রোজার মধ্যে উপজেলার খরনা ইউনিয়নের ধাওয়াপাড়া গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে রাজু (৩৮) এবং সুমাইয়া স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। রাজুর ভাতিজা পরিচয়ে ধাওয়াপাড়া গ্রামের মতিউর রহমান মতুল এর ছেলে রাকিবুল ইসলাম(৩৬) ওই বাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত করতেন।

নিহত সুমাইয়া আক্তার উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের পারতেখুর মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত জহুরুল ইসলামের মেয়ে। প্রায় ৮বছর আগে মাঝিড়া ইউনিয়নের ডোমনপুকুর নতুনপাড়া(টিকাদারপাড়া) গ্রামে বাপ্পী(৪২) নামের এক যুবকের সাথে সুমাইয়ার বিয়ে হয়েছিলো। প্রথম স্বামীর সাথে তালাক হওয়ায় বাপ্পী ছিলো সুমাইয়ার দ্বিতীয় স্বামী।

সুমাইয়া নিহতের ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা বা অন্য কোন মামলাও হয়নি বলে জানিয়েছেন সুমাইয়ার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনকারী শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক(এসআই) রাসেল আহম্মেদ। গলায় রশি পেঁচিয়ে সুমাইয়া আত্বহত্যা করেছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে এমনটাই পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে নিহত সুমাইয়ার সেই ভাড়া বাসায় প্রায় এক সপ্তাহ আগে গভীর রাতের কোন এক সময়ে অজ্ঞাত কেউ ঢুকে একটি ঘরের জিনিসপত্র ওলটপালট করেছে এবং লাশ উদ্ধার হওয়া ঘরটির জিনিসপত্র পরিপাটি করে গুছিয়ে রেখেছে। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের নির্দেশে পুরো বাসাটি তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন বাড়ির মালিক। ঘটনাটি জানাজানি হলে ওই এলাকায় নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে নিহতের পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন, সুমাইয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে রাজু এবং তাঁর সহযোগীরা। পুলিশ লাশের সুরতহালে তথ্য গোপন করে ময়নাতদন্ত ভিন্ন খাতে নেয়ার কথা বলছেন তাঁরা।
সুমাইয়ার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক(এসআই) রাসেল আহম্মেদ। সেই প্রতিবেদন ফরমে জখমের বর্ণনা ঘরে লেখা রয়েছে, মাথা স্বাভাবিক। মুখমন্ডল গোলাকার। চোখ বন্ধ ও ফোলা। মুখ বন্ধ, সামান্য জিহ্বা লাগানো। গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ পরিলক্ষিত হয়। হাত দুটি শরীরের সাথে লাগানো। মৃতদেহ অর্ধ পচন হওয়ায় এবং লাশ ফুলে যাওয়ায় শরীরে তেমন কোন চিহ্ন স্বাভাবিক ভাবে দেখা বা বোঝা সম্ভব হচ্ছেনা। মৃতের শরীরে ছিলা ছিলা ভাব হচ্ছে। শরীর অর্ধ পচন হওয়ায় শরীরে হাত দেওয়া যাচ্ছেনা। পা দুটি লম্বালম্বি আছে।

সুরতহালের দৈহিক অবস্থার ঘরে লেখা রয়েছে, অস্থিসন্ধি শক্ত হয়েছে। তাপমাত্রা ঠান্ডা । মরনোত্তর কালশিরা কলামে লেখা রয়েছে, গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ। আংশিক পচন, নাক ও মুখ দিয়ে তরল পদার্থ বের হতে দেখা গেল।

যৌন নিপীড়ণ বা ধর্ষণ লক্ষন কলামে লেখা হয়েছে, ২/৩দিন পূর্বে(২৫জুন লাশ উদ্ধারের) ভিকটিমের মৃত্যু হয়েছে মর্মে প্রাথমিক ধারনা হচ্ছে। মৃতদেহ অর্ধ পচন হওয়ায় মৃত্যুর সঠিক কারন নির্ণয় ও ধর্ষণ সংক্রান্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

উপরোক্ত তথ্যের বাহিরে গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকিলে কলামে লেখা রয়েছে, স্বামীদের ও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে জানাযায়-মৃতা তাঁর স্বামীর সঙ্গে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্বহত্যা করেছে।

মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানোর ফরমে জানামতে মৃত্যুর কারন কলামে লেখা হয়েছে, গলায় রশি দিয়ে। মৃতদেহের সঙ্গে পাঠানোর কাপড় ও জিনিসপত্র সমন্ধে মন্তব্য কলামে লেখা হয়েছে, পরিহিত গায়ের জামা, পরনের পেটিকোট ও গলায় প্যাঁচানো ওরনা আলামত হিসেবে জব্ধ।

জানতে চাইলে এই ঘটনার তদন্ত অফিসার উপপরিদর্শক(এসআই) রাসেল আহম্মেদ বলেন, সুমাইয়া আত্বহত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে গলায় রশি পেঁচিয়ে ফাঁসিতে মৃত্যু হয়েছে বলে পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় থানায় ইউডি(অপমৃত্যু) মামলা হয় নাই। নিহতের ভাই থানায় সাধারণ ডায়েরী(জিডি) করেছিলেন। এখন অবধি নিহতের পরিবার আমাদের সাথে যোগাযোগ করে নাই।

পুলিশের সুরতহালের স্বাক্ষী মোঃ ইমন(২৭) বলেন, লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশের সাথে আমি সেদিন শুরু থেকেই ছিলাম। লাশ নামানোর কাজে পুলিশকে সহযোগিতা করেছি। শুরু থেকে শেষ অবধি আমি এবং আরো কয়েকজন মোবাইল ফোনে তা ধারণ করেছি।

ইমন বলেন, নিহত সুমাইয়ার বাসার বারান্দার গ্রিল ভিতর থেকে তালাবদ্ধ ছিলো। পুলিশ এসে গ্রীলের বাহির থেকে ভিতরের সেই তালা ভেঙে বাসার ভিতরে প্রবেশ করে। সুমাইয়া যে ঘরে ঝুলছিলো সেই ঘরের দড়জা ভিতর থেকে হ্যাজবোল্ড(লোহার সিটকিরি) আটকানো ছিলো। পরের ঘরের দড়জা বাহির থেকে হ্যাজবোল্ড আটকানো ছিলো। পুলিশ বাহিরের হ্যাজবোল্ড খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন। দুই ঘরের মাঝখানে খোলা অবস্থায় প্লাস্টিকের আরেকটি দড়জা ছিলো। সেখান দিয়ে ঢুকে সুমাইয়ার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাওয়া যায়। লাশের পায়ের কাছেই কোলবালিশ পড়ে ছিলো। ঘরে এমন কিছু পাওয়া যায়নি, যার উপরে দাঁড়িয়ে ঘরের তীরের সাথে ওড়না পেঁচানো যায়।

ইমন আরো বলেন, লাশের পড়নে ডোরাকাটা সেমিজ ধরণের হাতাকাটা গেঞ্জি ছিলো আর নীল রঙের পেটিকোট ছিলো। গেঞ্জির বুকের অংশে অনেকটা জায়গা জুড়ে রক্ত ছিলো এবং পেটিকোট উল্টো করে পড়া ছিলো(ফিতা বাঁধার অংশ কোমড়ের পিছনে বাঁধা ছিলো)। ২হাত ছড়ানো ছিলো এবং ২হাতের কুনুই থেকে নিচ পর্যন্ত রক্তাত্ব জখম ছিলো। হয়তো কেউ তাকে(সুমাইয়া) পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে বলে ইমন ধারণা করেন। পুলিশের সুরতহালে আমি স্বাক্ষর করেছি তবে কাগজে কি লেখা ছিলো তা পড়ে দেখিনি বলে জানান ইমন।

ভাড়া বাড়ির মালিক অহেদ আলীর স্ত্রী(৬০) বলেন, গত রোজার মধ্যে ইফাতারের কিছু সময় আগে রাজু এবং সুমাইয়া আমাদের কাছে বাসা ভাড়া নেয়ার জন্য আসে। বাসায় রাজুর ভাতিজা পরিচয়ে রাকিবুল ইসলাম নামের একজন যাতায়াত করতো। তাঁরা ৪মাস থাকার পর সুমাইয়ার ঝুলন্ত লাশ ঘরের ভিতরে পাওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, পুলিশের নির্দেশে আমরা বাসাটি তালা দিয়ে রাখি। সম্প্রতি এক রাতে অজ্ঞাত কেউ সেখানে তালা খুলে প্রবেশ করে। যে ঘরে সুমাইয়ার লাশ পাওয়া যায়, সেই ঘরের জিনিস পত্র গুছিয়ে রাখে এবং আরেকটি ঘরের জিনিসপত্র লন্ড ভন্ড করা হয়েছে। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম চোর এসেছে। কিন্তু কিছু চুরি হয়নি। পরে বিষয়টি আমরা ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য তাজুল ইসলামকে জানাই।

সুরতহালের স্বাক্ষী এবং সুমাইয়ার লাশ নামানোর আগ থেকে শেষ অবধি পুলিশের সাথে থাকা আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তাজুল ইসলাম বলেন, লাশ এবং বাড়ির পরিবেশ দেখে আমার কাছে আত্বহত্যা মনে হয়নি। কেননা কেউ আত্বহত্যা করার পর দড়জা বাহির থেকে লাগিয়ে দিতে পারে না। লাশের গেঞ্জিতে বুকের অংশের অনেকটা জুড়ে রক্ত ছিলো। দুই হাতে জখমের মত চিহ্ন ছিলো এবং কুনুইয়ের নিচ থেকে রক্ত জমাট বাঁধার মত ছিলো। রাজু নামের একজনের সাথে স্বামী পরিচয়ে থাকলেও লাশ দেখতে সে আসেনি। রাজু তার প্রকৃত স্বামী ছিলোই না।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি ওই বাড়িতে রাতে কেউ ঢুকেছিলো। সুমাইয়ার লাশ পাওয়া ঘরটি গুছিয়ে রাখা হয়েছে আর অন্য ঘরটি অগোছালো করা হয়েছে। কিছু চুরি না হওয়ায় সন্দেহ করছি, সুমাইয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত কোন বিষয় এখানে লুকিয়ে আছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সুমাইয়ার মা আবেদা খাতুন বলেন, আমার মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে রাজু এবং তাঁর সহযোগীরা হত্যা করেছে। পুলিশ রাজুকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। আমার মেয়ের গেঞ্জিতে বুকের অংশে রক্ত ছিলো কিন্তু পুলিশ সুরতহালে তা উল্লেখ করেনি। আমার মেয়ের লাশে হাত ছড়ানো এবং জখম থাকলেও পুলিশ সুরতহালে তা উল্লেখ করেনি। হাত সোজা ছিলো এবং শরীরে জখমের চিহ্ন নাই বলে সুরতহালে মিথ্যা লিখেছে।

সুমাইয়ার চাচা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য দুলাল হোসেন বলেন, লাশ উদ্ধারের পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশের কোন সহযোগিতা পাই নাই। সুমাইয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ অপরাধীদের আঁড়াল করার চেষ্টা করেছে।

দুলাল হোসেন আরো বলেন, সুমাইয়ার গলায় ওড়না পাওয়া গেলেও, সুরতহালে কোথাও রশি আবার ওড়না লেখা রয়েছে। ঘটনার পর থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয় নাই। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের কাগজ নিতে থানায় অনেক দিন থেকে ঘুরছি কিন্তু পুলিশ আমাদের তা দেয় নাই। রাজুর সাথে সুমাইয়ার বিয়ে হয়নি। রাজু এবং রাকিবুল ইসলাম এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের হেফাজতে নেয় নি।

সুমাইয়ার সাথে স্বামী পরিচয়ে থাকা রাজু পলাতক থাকায় তাঁর সাথে কথা বলা সম্ভব হয় নাই। রাজুর ভাতিজা পরিচয়ে ভাড়া বাসায় যাতায়াত করা রাকিবুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, আমি খড়না ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য। বর্তমানে মাটি বালু ব্যবসা করি। রাজু আমার ব্যবসায়িক অংশিদার ছিলো। রাজুর সাথে আমার সেরকম যোগাযোগ ছিলো না। দেখা হলে কখনো একসাথে চা টা খেতাম।

রাকিবুল আরো বলেন, সুমাইয়াকে নিয়ে রাজু বাসা ভাড়া নেয়ার প্রায় দেড়মাস পর আমি ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। রাজু আমাকে ব্যবসা করার জন্য টাকা দিত। যখন টাকার দরকার হতো তখনি রাজুর কাছে ওই বাড়িতে যেতাম। সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার হওয়ার এক সপ্তাহ আগে আমি ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত রাজুর সাথে আমার যোগাযোগ নাই। রাজু ফোন বন্ধ করে কোথায় আছে আমার জানা নাই। সুমাইয়ার মৃত্যুর ঘটনায় আমার কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নাই। কি ভাবে মৃত্যু হয়েছে তাও জানি না।

খরনা ধাওয়া পাড়া গ্রামে এবং খরনা হাট এলাকার অনেকেই পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, রাজু এক সময় মাইক্রো বাস চালাতেন। রাকিবুলকে কেউ মাটি বালু ব্যবসায়ী হিসেবে চেনে না। মূলত এরা মাদক কারবারি। তবে বরাবরই এরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে।

জানতে চাইলে শাজাহানপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, সুমাইয়ার মৃত্যু ঘটনা তদন্ত চলছে। নিহতের পরিবার চাইলে মামলা করতে পারবে।

সর্বাধিক জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ