৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

শাজাহানপুরে হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক

spot_img

এফ. এম রিপন আহম্মেদ:

মাদক যেন ফেরিওয়ালার বাদাম, হাত বাড়ালেই মিলছে। বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে বন্দরের হাট-বাজারেও হাত বাড়ালেই মিলছে গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ যে কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলা পার্শ্ববর্তী ডোমুন পুকুর, জোড়া দক্ষিণ পাড়া, পারতেখুর মধ্যে পাড়া, খলিশাকান্দি ইটভাটা এলাকা, বৃকুষ্টিয়ায় বড় ব্রীজের উত্তর পাশ্ববর্তী রাস্তায়, কামারপাড়ার হাট, ভোলাবাড়ী স্ট্যান্ডে চায়ের দোকানে, শাহানাগর, শায়রুল বাজার ,জোকা পুর্ব পাড়া, দুরুলিয়া মিদ্দাপাড়া, ঘাষিড়া মাদ্রাসাপাড়া, সাজাপুর পন্ডিত পাড়া, বেটে পাড়া, খরনা উত্তরপাড়া হিন্দুপাড়া, মাঝিড়া বান্নিঘাটা, আড়িয়া বাজার, কাটাবাড়িয়া, তালপুকুর, রহিমাবাদ,গোবিন্দপুর মামুনুর রশিদ বাড়ী, বামনদীঘি খালাসের বাড়ী, হাইওয়ে হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টসহ উপজেলার প্রায় শতাধিক স্পটে মাদক বেচাকেনা হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে রাত ভর চলে মাদক সেবন ও বানিজ্য। উপজেলার সঙ্গে থাকা গ্রামগুলোতে এর প্রভাব বেশি।

অবাধে চলছে মাদক কারবারিদের রমরমা কারবার। মাদকের করাল গ্রাসে আসক্ত হয়ে ডুবে থাকছে উপজেলার উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত শ্রেণির হাজার হাজার মানুষ। এ তালিকায় রয়েছে যুবসমাজ, স্কুলকলেজ পড়ুয়া ছাত্র, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এতে উপজেলাজুড়ে মাদকসেবীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এলাকায় উঠতি বয়সী তরুণ ও স্কুলকলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের মাঝে মাদকসেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন-উৎকণ্ঠায় আছেন অভিভাবকমহল।

স্থানীয়রাও ভয়ে এসব মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারছেন না। ফলে উপজেলাতে এখন অবাধে চলছে মাদক কেনাবেচা। উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজ মাদকের এই ভয়াল থাবা থেকে নতুন প্রজন্মকে বাঁচাতে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, যারা কিছুটা বিত্তশালী তারাই ফেনসিডিলের দিকেই ঝুঁকে রয়েছেন। অপরদিকে ইয়াবা ও গাঁজার দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এ দু’টি মাদকের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। মোবাইল অর্ডারে মিলছে মাদক। যেসব এলাকা নীরব ও সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় সেইসব স্পটে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ মাদক বিক্রেতাদের দেখা যায়। প্রতিদিন যে হাড়ে বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যা, এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অভিভাবকেরা।

উপজেলার মাঝিড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইনুল ইসলাম সরকার সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত সবাই অল্পবয়সী। মাদকের ভয়াল নেশার ছোবলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাদের অল্পবয়সী যুবক ছেলেরা। ধ্বংস হচ্ছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও। মাদকাসক্ত সন্তানদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি আমরা শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীদের বাবা-মা।

উপজেলার খলিশাকান্দি গ্ৰামের শ্যামল নামের এক সমাজসেবক সংবাদ বুলেটিনকে জানান, এলাকার ও বাইরের মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জড়িত থাকায় অতীতের চেয়ে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে মাদক। মাদক সিন্ডিকেট গ্রেফতার করে ভাঙা না হলে মাদক সেবী ও কারবারি বৃদ্ধি পাবে।

প্রশাসনের কাছে উপজেলাবাসীর দাবি দ্রুত যেন মাদক কারবারি ও সেবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ওয়াদুদ আলম মুঠোফোনে সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, ৫ আগস্টের পর এলাকার শান্তি শৃঙ্খলার বজায় রাখতে চুরি, ছিনতাই,ডাকাতী, সন্ত্রাসীসহ ওয়েরেন্টের আসামি ধরার কাজে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। যে কারণে মাদকের উদ্ধার ব্যাপারে আমরা কম সময় দিতে পারছি । তাছাড়া থানায় প্রায় পুলিশ সদস্যই নতুন, তাই অভিযান পরিচালনায় একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে খুব দ্রুতই মাদক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসব।

সর্বাধিক জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ