
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে চাঁদাবাজি, ঘুষ আর ভয়ভীতির পরিবেশে কর্মরত রয়েছেন পরিবার কল্যাণ সহকারীরা (এফডাব্লিউএ)। অফিসের ভেতরেই সহকর্মীদের হাতে বছরের পর বছর ধরে এসব সহকারীরা চরমভাবে হয়রানির শিকার হলেও সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নিরবতা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, অফিস সহকারী পদে কর্মরত দুজন ব্যক্তি টানা ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে একই কর্মস্থলে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে নানা অজুহাতে পরিবার কল্যাণ সহকারীদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই চাকরি হারানোর আশঙ্কায় মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
সম্প্রতি পরিবার কল্যাণ সহকারীদের টিএডিএ বিল প্রদানের নামে প্রতিজন থেকে ২৪০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। জানা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন এবং বিলুপ্ত সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন মিলিয়ে মোট ১০টি ইউনিয়নের বহু সহকারীর কাছ থেকেই এই টাকা আদায় করা হয়েছে।
একাধিক ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের টিএডিএ বিল কত তা জানি না, তবে শতকরা ৩০ ভাগ হারে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। কেউ হয়তো ৩ হাজার টাকা পাবে, অথচ আগেই ৯০০ টাকা ঘুষ হিসেবে দিয়ে দিতে হয়েছে। এটা স্পষ্ট চাঁদাবাজি। আমরা এর প্রতিবাদ করলে হয়রানির শিকার হবো।’
তারা আরও জানান, অফিস সহকারী ছাড়া কোনো কাজ হয় না। যেন তারা ‘দয়া’ করে ফাইল প্রসেস করেন। ট্রেনিংয়ের টাকা, এরিয়া বিলসহ অন্যান্য খরচেও অনিয়ম লেগেই আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাজাহানপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আনিছুর রহমান সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, ‘ টাকা নেয়ার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’
চোপিনগর ও মাদলা ইউনিয়নের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শকরা মোবাইলে বলেন, ‘আমরা কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি।’
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাইফুর রহমান সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। কেউ টাকা নিয়ে থাকলে তা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।’
ভুক্তভোগীদের দাবি, এসব অনিয়ম ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে, দীর্ঘদিন একই পদে থাকা কর্মকর্তাদের বদলি নিশ্চিত করা হোক এবং যারা টাকা নিয়েছে তাদের কাছ থেকে তা ফিরিয়ে নেওয়া হোক।