
মোংলা সংবাদদাতা: সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদী কয়লা, প্লাস্টিক, বিষ ও শিল্প দূষণে আক্রান্ত। গণতন্ত্রের ন্যায় বাংলাদেশের নদ-নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন দ্বারা ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। নদী একটি জীবন্ত সত্তা। আমাদের নদী, আমাদের অস্তিত্ব। দখল-দূষণ ও অসাধু জেলেদের বিষের ছোবল থেকে সুন্দরবন অঞ্চলের নদ-নদীসহ সারাদেশের নদ-নদীকে রক্ষা করতে হবে।
২৮ সেপ্টেম্বর রবিবার সকালে মোংলার দক্ষিণ কাইনমারি পশুর নদীর পাড়ে বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে ”পশুর নদী বাঁচাও, সুন্দরবন বাঁচাও” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন। ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার, লিডার্স ও বাদাবন সংঘের আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার সকাল ১১টায় বিশ্ব নদী দিবসের আলোচনা সভায় সভায় সভাপতিত্ব করেন পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ও সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পরিবেশযোদ্ধা মোঃ নূর আলম শেখ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সমাজসেবক আব্দুল মান্নান হাওলাদার, সমাজকর্মী আবু হোসেন পনি, ক্রীড়া সংগঠক শেখ রুস্তম আলী, পরিবেশকর্মী আব্দুর রশিদ হাওলাদার, ধরা’র নেতা এস এম জানে আলম বাবু, পরিবেশকর্মী হাছিব সরদার, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার মেহেদী হাসান প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন সুন্দরবনের নদী-খালে যারা বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন করছে তাদের প্রতিহত করতে হবে। নদী দখলকারীদের সামাজিক ভাবে বয়কট করতে হবে। নদী বাঁচলে উপকূল বাঁচবে, বাংলাদেশ বাঁচবে।
সভাপতির বক্তব্যে সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পরিবেশযোদ্ধা মোঃ নূর আলম শেখ বলেন নদীর স্বাস্থ্য ভালো থাকলে মানুষের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণে পশুর নদীর পানি বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। নদীর মাছসহ জলজপ্রাণীর অস্তিত্ব হুমকিতে আছে। গবেষণায় পশুর নদীর মাছের দেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে। যেকোন মূল্য পশুর নদীসহ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের অঞ্চলের নদ-নদী সমুহকে কয়লার দূষণ, প্লাস্টিক দূষণ, শিল্পদূষণ ও বিষের দূষণমুক্ত করতে হবে। নদী বাঁচাতে সবাইকে একপ্রাণ হতে হবে।
আলোচনা সভা শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় পশুর নদী পাড়ে মানববন্ধন, পশুর নদীতে হাঁস ধরা ও সাতার প্রতিযোগিতা এবং গণগোসল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া নদীকে প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণমুক্ত করতে ইয়ুথ ফর সুন্দরবনের পক্ষ থেকে পাটের ব্যাগ বিতরণ করা হয়। সবশেষে নদীকেন্দ্রিক গানের আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়।