আফগানিস্তানে তালেবান সরকার 'অশ্লীলতা' রোধে সারা দেশে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
বিবিসি ও ইন্টারনেট নজরদারি সংস্থা নেটব্লক্স সূত্রে জানা যায়, দেশটি বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ “ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট”-এর মধ্যে রয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট, স্যাটেলাইট টিভি ও টেলিফোন সেবাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। কাবুলে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো তাদের স্থানীয় অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার বিকালে কাবুলের বাসিন্দারা জানান, তাদের ফাইবার-অপটিক ইন্টারনেট হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ব্যাংকিং কার্যক্রম ও ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্যে দেখা গেছে, কাবুল বিমানবন্দর থেকে অন্তত আটটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। টোলো নিউজ জানিয়েছে, তাদের সম্প্রচারেও বিঘ্ন ঘটতে পারে।
তালেবান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টেলিযোগাযোগ সেবা ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ বন্ধ থাকবে। তারা দাবি করছে, এটি “অশ্লীলতা রোধ” এবং নৈতিকতার বিধিনিষেধ কার্যকরের অংশ। তবে বিকল্প ইন্টারনেট সংযোগের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিস্তারিত জানানো হয়নি। ব্যবসায়ীরা সতর্ক করেছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনীতি ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সাবেক আফগান সংসদ সদস্য মারিয়াম সোলায়মানখিল মন্তব্য করেছেন, ভেতর থেকে আফগান কণ্ঠস্বর ছাড়া নীরবতা আরও ভয়ংকর। সাবেক সাংবাদিক হামিদ হায়দারি বলেছেন, দেশটি যেন উত্তর কোরিয়ার পথে হাঁটছে।
২০২১ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তালেবান শিক্ষা, সংস্কৃতি ও নারীদের অধিকার নিয়ে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা, নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বই প্রত্যাহার এবং সম্প্রতি ‘মিডওয়াইফ’ কোর্স বন্ধ করা—এসব পদক্ষেপে নারী ও কন্যা শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।