ইমামুল মিল্লাত, শেরপুর (বগুড়া):
ঈদের পরদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বগুড়ার শেরপুর উপজেলার প্রধান সড়কগুলোতে দেখা গেছে মোটরসাইকেলের উপচে পড়া ভিড়। এর মধ্যে অধিকাংশ চালকই ছিলেন তরুণ এবং অনভিজ্ঞ। কারো মাথায় হেলমেট নেই, আবার কেউ এক বাইকে তিনজন চড়ে চলেছেন দ্রুতগতিতে। যা সাধারণ মানুষের জন্য হয়ে উঠেছে ভয়াবহ এক আতঙ্ক।
শেরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার দোকানি আব্দুর করিম বলেন, " কোরবানির দিন যত না মোটরসাইকেল দেখি, তার চেয়ে ঈদের পরদিন বেশি দেখি। একেকজন যেন রাস্তায় বাইক চালাতে না, রেস দিতে নামে। দোকানে বসে বসে টেনশনে থাকি, কখন কে ধাক্কা দেয়।"
স্থানীয় শিক্ষার্থী আতিকুল ইসলাম জানান,
"বিকেলের দিকটায় রাস্তায় হাঁটতেই ভয় লাগে। পেছন থেকে হুট করে শব্দ করে বাইক আসে, আবার হর্নও দেয় না। যারা চালাচ্ছে, তাদের দেখলেই বোঝা যায় কেউই নিয়ম জানে না।"
শেরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুদ্দিন বলেন, "ঈদ ও পরবর্তী সময়ে সাধারণত বাইকের সংখ্যা বেড়ে যায়। এবার অনেক অনভিজ্ঞ চালককে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে। আমরা কিছু এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়েছি, তবে জনবল সীমিত থাকায় পুরো উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কঠিন। মানুষকেও সচেতন হতে হবে।"
স্থানীয় একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজের মালিক আব্দুল খালেক বলেন, "ঈদের আগে অনেক বাইক বিক্রি হয়েছে। বেশিরভাগ কিনেছে তরুণরা, যারা লাইসেন্স করায়নি। ঈদের পরদিন বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে, কারণ ওইদিনই সবাইকে ‘দেখানো’র একটা প্রতিযোগিতা চলে।"
শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিনে অনেক তরুণ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসে। অনেককে আবার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
শেরপুরের ধনকুন্ডি শাহনাজ সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইনুল ইসলাম বলেন, "এটা শুধু আইন প্রয়োগে ঠেকানো যাবে না। পরিবারকেও দায়িত্ব নিতে হবে। সন্তানের হাতে হঠাৎ বাইক তুলে দিলে তার ফল হতে পারে ভয়াবহ। সচেতনতার জন্য স্কুল-কলেজ পর্যায়েও প্রচার চালানো উচিত।"