
মোঃ আতিকুর রহমান:
ফুলকোট নবোদয় কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়
শিক্ষা ও প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক
বাংলাদেশ ভোকেশনাল শিক্ষক সমিতি,কেন্দ্রিয় কমিটি
জীবনের লক্ষ্য স্থির করার পথ পরীক্ষা। পরীক্ষা হচ্ছে মূল্যায়নের একমাত্র পন্থা। এস এস সি পরীক্ষা শুরু হতে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। এস এস সি পরীক্ষা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জীবনের একটি মাইলফলক।মাঝখানে কয়েক বছর পরীক্ষা বা মুল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে নানাবিধ মতপার্থক্য ছিল। দীর্ঘ দশ বৎসরের শিক্ষা জীবনের মধ্যে অনেক ধরনের পরীক্ষা হয় তারপরও এস এস সি পরীক্ষার মূল্যায়নের মধ্য দিয়েই শুরু হয় জীবনের প্রথম অধ্যায় । তাই এই পরীক্ষা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জীবনের প্রথম ধাপ এর মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয় উচ্চ শিক্ষার। বর্তমানে পরীক্ষা পদ্ধতিতে গঠনমূলক অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগের পরীক্ষা পদ্ধতি এখনকার পরীক্ষা পদ্ধতির মাঝে রয়েছে অনেক ভিন্নতা। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার আগে স্থাস্থ্য সচেতনতার দিকে লক্ষ রাখতে হবে,অসুস্থতা পরীক্ষায় একটি বড় প্রভাব ফেলতে পারে। নিয়মিত ঘুম, বেশি রাত না জাগা, বেশি করে পানি পান করা, সুষম খাদ্য ও পুষ্টিকর ফল গ্রহণ করা অপরিহার্য। সর্বোপরি নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া।
প্রস্তুতি যাই হোক, আত্মবিশ্বাস যেন থাকে শতভাগ। অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করা যাবে না এবং কোনো বিষয় নিয়ে এ মুহূর্তে হতাশা ও বিষাদগ্রস্ত থাকা যাবে না। মানসিক প্রশান্তি পরীক্ষায় নিজেকে অনেক এগিয়ে নিতে পারে। পরীক্ষার সময়ে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গ্যাজেট আসক্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে । এতে মনোযোগ বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ থাকে। পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষা বোর্ডের প্রবেশপত্রে বেশ কিছু নিয়মাবলি দেওয়া থাকে। সেগুলো আবশ্যিকভাবে পড়া উচিত এবং তা মেনে চলতে হবে। পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময়, পরীক্ষা চলাকালীন নিয়মকানুন, পরীক্ষার খাতাসংক্রান্ত নিয়ম সম্পর্কে আগে থেকে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। ছোট একটি ভুল অনেক বড় বিপদের কারণ হয়ে যেতে পারে। তাই রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, সেট কোডসহ অন্য আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করতে হবে। শেষ মুহূর্তে অনেক শিক্ষক, বিভিন্ন কোচিং সেন্টার অনেক প্রকার সাজেশন, নোট দিয়ে থাকেন। এগুলো নিয়ে হতাশার কোনো কারণ নেই, শিক্ষাব্যবস্থায় এসব সাজেশন ভিত্তিহীন। অতিরিক্ত পড়াশোনার না করে শেষ মুহূর্তে যতটা পারা যায় নিজের প্রস্তুতিকে আরও দৃঢ় করে তোলা উচিত। নিয়মিত অনুশীলন ও রিভিশনই হোক শিক্ষার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীর করনীয় হবে , একটি প্রশ্নের উত্তর করার সময় কোন ক্রমেই অন্য প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। প্রশ্ন লেখার পূর্বে প্রশ্নের সঠিক নাম্বার দিয়ে প্রশ্নের উত্তর শুরু করবে এটি অধিকাংশ শিক্ষকরাই পছন্দ করে।যেহেতু পরিক্ষার হলে সময় নির্ধারিত, তাই প্রথম দিকে জানা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে লেখা শুরু করতে হবে। অতিরিক্ত উত্তরপত্র নেওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল করবেন উত্তরপত্রে কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষকের সাক্ষার দেওয়া আছে কী না।লেখার সময় খেয়াল রাখতে হবে বানান শুদ্ধ করে লেখার ।লেখা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে এবং প্রশ্নে ভুমিকা, বর্ণনা এবং উপসংহার সহকারে লিখলে, সঠিক নাম্বার পাওয়ার সম্ভবনা থাকে। পরিক্ষার খাতায় PTO লেখা উচিত নয়।লেখার লেআউট সঠিক হতে হবে, পরীক্ষার হলে ভদ্রতা বজায় রাখতে হবে।নকল করা বা অন্যের দেখা, কারো সাথে কথা বলা ইত্যাদি বদ অভ্যাস থেকে বিরত থাকবে কারণ এর ফলে পরিক্ষা আইনে পরীক্ষা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।উত্তরপত্র জমা দেওয়ার আগে দুতিনবার দেখে নিতে হবে কোথাও কোন ভুল-ত্রুটি আছে কি-না। খাতায় অবশ্যই মারজিন ব্যবহার করবে এবং মারজিনের বাহিরে কোন কিছু লিখবে না । ২০২৫ সালের এস এস সি সকল পরীক্ষার্থীদের প্রতি রইল শুভকামনা।