
মাজহারুল ইসলাম নাঈম, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি:
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায় গোমতী নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভয়াবহ বন্যার কারণে জীবনযাত্রা চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। ভারত থেকে আসা অতিরিক্ত পানির স্রোত এবং টানা দুইদিনের ভারী বর্ষণের ফলে গোমতী নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে গিয়ে বহু গ্রাম প্লাবিত করেছে।
বর্তমানে, বন্যার কারণে অসংখ্য ঘরবাড়ি পানির নিচে চলে গেছে এবং বহু গবাদি পশু মারা গেছে। ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যার ফলে কৃষকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। নদীর পানিতে বহু আসবাবপত্র ভেসে গেছে, মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অনেক মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁতরে এবং নৌকার সাহায্যে নিজেদের বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন।
ভূবনঘর হেলিপেডে বর্তমানে ৫০টি পরিবার আটকা পড়ে রয়েছে। স্থানীয় জামায়াতসহ অনেক সেচ্ছাসেবী তাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে এসেছে, তবে অসংখ্য দর্শনার্থীর ভিড়ের কারণে উদ্ধার কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। বেরিবাঁধের কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
যানবাহন চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে; নহল চৌমুহনী থেকে মুরাদনগর পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ রয়েছে এবং আরও কিছু রাস্তা পানির কারণে অচল হয়ে পড়েছে। সেচ্ছাসেবকদের দ্রুত তৎপরতা প্রয়োজন, কারণ পানির উচ্চতা “আইল ছুই ছুই” অবস্থায় পৌঁছেছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন। ত্রাণ কার্যক্রম এবং পুনর্বাসন কার্যক্রমে দ্রুত সহায়তা দিয়ে বন্যার ক্ষতি কমানোর চেষ্টা চলছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, নদীভাঙন প্রতিরোধ এবং বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থা উন্নত করার মাধ্যমে এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
কুমিল্লার মুরাদনগরের মানুষদের জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে, এবং এই অবস্থার উন্নতি করার জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে।