অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসছে ৯ জুন যুক্তরাজ্য সফর করবেন। প্রধান উপদেষ্টার সফরকালে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কি তার কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক বা সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে? এ প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে। রাজনৈতিক নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল। বিশেষ করে ‘ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে’ মর্মে তারেক রহমানের সামপ্রতিক দাবি এবং টোকিওতে ড. ইউনূসের ‘একটিমাত্র দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়’ মন্তব্যের কারণে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে উত্তাপ বিরাজ করছে সেই প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য লন্ডন বৈঠকের দিকে এখন সবার দৃষ্টি।
তবে ঢাকা বা লন্ডনের কোনো কূটনৈতিক বা রাজনৈতিক সূত্রই এখনো এ বৈঠক চূড়ান্ত হওয়ার খবর দিতে পারেনি।
প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মধ্যকার প্রস্তাবিত বৈঠক আয়োজন নিয়ে যোগাযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে যে দুই নেতার মধ্যে লন্ডনে একটি বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে। সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। তবে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ও রোডম্যাপ ঘোষণার ইস্যুতে সরকার এবং বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর সঙ্গে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা সম্ভাব্য লন্ডন বৈঠক আয়োজনে কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির তরফে এ বৈঠকের শর্ত হিসেবে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ এবং নির্বাচনী রোডম্যাপের ব্যাপারে আগাম নীতিগত ঐকমত্যের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, সরকারপ্রধান ও বিএনপি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ নির্বাচনের টাইমলাইন নিয়ে আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করবে। অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগে বিএনপি বৈঠকের বিষয়ে একমত হওয়ার আগে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নির্ধারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। ফলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সম্ভাব্য লন্ডন বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি।
সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, বিরোধীদলীয় নেতা কেমি বাডেনক, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার, কমনওয়েলথ ও আইএমওর মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। সম্ভাব্য এসব বৈঠকের তারিখ ও সময় এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এসব বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষ করে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, রোহিঙ্গা ইস্যু, বিগত সরকারের সময় যুক্তরাজ্যে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনাসহ বৈশ্বিক রাজনৈতিক আলোচনা স্থান পেতে পারে। উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এম এ মোমেন এ সফরে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন।
১১ জুন সকাল ১১টায় ড. ইউনূস থিংকট্যাংক চাথাম হাউসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরদিন দুপুরে তিনি বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এক শর বেশি প্রবাসী বাংলাদেশিকে এ সভায় আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তবে মতবিনিময়সভার ভেন্যু এখনো জানানো হয়নি। প্রধান উপদেষ্টা স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (সোয়াস) পরিদর্শনে যেতে পারেন বলে জানা গেছে। তিনি বিবিসি, আইটিভি, গার্ডিয়ান ও টাইমসের সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন। সূত্র: কালের কণ্ঠ।