বগুড়ার কাহালুতে নিখোঁজের আড়াই মাস পর মাটিচাপা অবস্থায় বিধান চন্দ্র সরকার (২০) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৩ জুন) দুপুরে উপজেলার শিবকলমা এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিধান চন্দ্র সরকার শিবকলমা গ্রামের অনীল চন্দ্র সরকারের ছেলে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, বিপুল চন্দ্র প্রামানিক (৩৫), দিনেশ চন্দ্র প্রামানিক (৪১) ও উৎপল চন্দ্র (২৪)।
জেলা ডিবি পুলিশের (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানিয়েছেন, নিহত বিধান ও তারা পূর্বপরিচিত। টাকা আদায় করার জন্য তারা বিধানকে আটকে রাখার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনামতো আসামিরা বিধানকে নিয়ে শিবাকলমা গ্রামে নিয়ে মদ পান করায়। বিধান নেশাগ্রস্থ হলে আসামিরা বিধানের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে।
তাদের পরিকল্পনা ছিল বিধানকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে অচেতন করা। কিন্তু আঘাত গুরুতর হওয়ায় তারা তাৎক্ষনিক হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। বিধান আঘাত পেয়ে পাশের নালায় পড়ে গেলে আসামিরা তাকে পানিতে মাথা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর তারা মরদেহ গুম করার জন্য সেখানে মাটি খুড়ে পুতে রাখে। পরদিন ভোরে বিপুল মরদেহ পুতে রাখার স্থানের কি অবস্থা জানতে ঘটনাস্থলে যায় এবং দেখতে পায় শেয়ালে মাটি খুড়ে মরদেহের একটি হাত বের করে ফেলেছে। এরপর বিপুল আবারও মাটি চাপা দেয়। বিপুল ৪-৫ দিন ধরে বিষয়টি নজরদারি করে এবং আসামি দিনেশ ও উৎপলের সঙ্গে আলোচনা করে অন্যস্থানে আরও ভালোভাবে মরদেহ পুতে রাখার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা ৪-৫ দিন পর মরদেহটি সরিয়ে প্রায় ৫০ গজ দূরে জমি সেচের ড্রেনের নিচে গভীর করে পুতে ফেলে। তবে ঘটনার দেড় মাস অতিবাহিত হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় তারা বিধানের বাবা অনীলের কাছে মোবাইল ফোনে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করতে শুরু করে।
ডিবি পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, বিধান নিখোঁজের পর থানায় সাধারণ ডায়েরী হয়েছিল। এরপর থেকেই তাকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত ছিলো। তবে আসামিরা মুক্তিপণ চাওয়া শুরু করলে বিধানের বাবা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে আসামিদের শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।।