নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ সেই ভয়াল ৩ মার্চ। গুজব ছড়িয়ে ১১ বছর আগে এদিন ভোররাত থেকেই বগুড়ায় শুরু হয় জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব। সেই ধ্বংসযজ্ঞের দীর্ঘ বছর পেরিয়ে গেলেও স্বাক্ষী পর্যায়ে ঝুলে আছে মামলাগুলোর বিচার।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায়কে কেন্দ্র করে একই বছরের ৩ মার্চ হরতাল ডাকে জামায়াত-শিবির। সেদিন ভোররাত থেকে প্রচার করা হয় সাঈদীর মুখ চাঁদে দেখা গেছে- এমন গুজব। তাকে রক্ষার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এমনকি বিভিন্ন উপজেলায় মসজিদের মাইকেও সাঈদীকে চাঁদে দেখা যাচ্ছে এমন গুজব ছড়ায় জামায়াত-শিবির। এতে হাজার হাজার মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। তাদেরকে সামনে রেখে জামায়াত-শিবির মেতে উঠে নৃশংসতায়। তাদের লক্ষ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের অফিস-বাড়ি। বিভিন্ন থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে চালানো হয় হামলা। করা হয় ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ।
জানা গেছে, জামায়াত শিবিরের সেদিনের নৃশংসতায় আহত হন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য। পুরো জেলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। বগুড়ার আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ি ও ব্যক্তিগত কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে চালানো হয় বর্বর হামলা। বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় এবং রেল স্টেশন এলাকাতেও করা হয় ভাঙচুর। এদিন বগুড়া সদর, শাজাহানপুর ও নন্দীগ্রাম উপজেলায় সবচাইতে বেশি তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবির। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শাজাহানপুর উপজেলাতে তিন নারীসহ নিহত হন চারজন।
এসব ঘটনায় বর্তমানে ২০ টি মামলা বিচারাধীন। তবে মামলা দায়েরের ১১ বছর হলেও শেষ হয়নি বিচার কার্য।
বগুড়া জেলা জজ আদালতের সরকারপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আবদুল মতিন জানান, ৩ মার্চের ঘটনায় করা মামলাগুলোর চার্জ গঠন হয়েছে। এখন সেগুলো স্বাক্ষীর পর্যায়ে আছে। খুব শিগগিরই ওই মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হবে।