
স্মৃতি, অভিমান আর নিঃসঙ্গতায় জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা প্রবীণদের আশ্রয় হয় বৃদ্ধাশ্রমে। বৃদ্ধাশ্রমে কেউ কারো আপন নয়, তবু সবাই একে অপরের গল্পে নিজেকে খুঁজে পায়। প্রতিটি মুখ একেকটি ইতিহাস। কেউ সন্তানহীন, কেউ আবার সন্তানদের ব্যস্ত জীবনে মূল্যহীন। তবুও, তারা প্রতিদিন অপেক্ষার প্রহর গুনেন হয়তো আসবে প্রিয়জন, প্রিয় সন্তান।

আজ বিশ্ব প্রবীণ দিবস, কথা হয় আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমের রহিম মিয়ার সঙ্গে। চোখে শূন্যতা আর বুকে চাপা অভিমানের পাহাড় নিয়ে ৯২ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ স্ত্রী-সন্তান থাকতেও জীবনের দীর্ঘ ৩১ বছর কাটিয়ে দিলেন বৃদ্ধাশ্রমে।
যে হাতে একদিন সন্তানের মুখে আহার তুলে দিতো, সে হাতই আজ চোখের পানিতে ভিজছে। তারপরও, শেষ বয়সে প্রিয়জনকে এক পলক দেখার আশায় যেন বেঁচে আছেন তারা।
বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধারা জানান, তাদের আত্মীয়-স্বজন আছে। কেউ খোঁজ নেয় না। তবে আত্মীয়-স্বজনদের তাদের দেখতে মনে চায়।
বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে অনেকেই মানসিক এবং শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন বছরের পর বছর। কেউবা এসেছেন পথ ভুলে আবার কেউবা বাধ্য হয়ে।
আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দা সেলিনা শেলী বলেন, এখনও লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায়। বিত্তমান মানুষের কাছে আমার আবেদন এই মানুষগুলোর জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রবীণদের অধিকার নিশ্চিতে আন্তঃপ্রজন্ম সংযোগ তৈরির পাশাপাশি বয়স্ক ভাতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ মাইনুদ্দিন মোল্লাহ বলেন, নবীন-প্রবীণদের মধ্যে আন্ত-প্রজন্ম সংযোগ তৈরি করতে হবে। বয়স্ক ভাতাটাকে যদি আমরা সেফটিনেসের উপায় হিসেবে বিবেচনা করি সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় পরিমাণটা বাড়ানো উচিত।