
ফিলিস্তিন ও আরাকানের পর আরেকটি ভয়াবহ মুসলিম নিধনের হটস্পটে পরিণত হয়েছে উগ্র সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ভারত। দেশটির হিন্দুত্ববাদী মুসলিম বিদ্বেষ একটি সিস্টেমেটিক জেনোসাইডে পরিনত হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভিকটিম সেজে দখলদার ইসরাইল যেভাবে ইসলাম-বিদ্বেষী কিছু পরাশক্তির সহায়তায় ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও দমনপীড়ন চালাচ্ছে ঠিক একই মডেলে ভিকটিম হওয়ার নাটক সাজিয়ে মুসলিম নিধনের ষড়যন্ত্রে নেমেছে গুজরাটের কসাই মোদি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানেয়াহুর সাথে মোদির ঘনিষ্ঠতা ও মুসলিমবিরোধী ইস্যুতে পরস্পরকে সহায়তার ইতিহাস সবার জানা।
ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মিরের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট পহেলগাম এলাকায় একটি পর্যটকদলের উপর বন্দুক হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছে। এমন সময় এই ঘটনা ঘটল, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সউদি আরব সফরে ছিলেন এবং মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্স ভারত সফর করছিলেন।
পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো মঙ্গলবারের এই হামলাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় চলছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ঘটনা প্রবাহে ভারত যখন এক কঠিন সন্ধিক্ষণ পার করছে, তখন কাশ্মিরে হামলায় বেসামরিক লোক হতাহতের ঘটনা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।কাশ্মির যদিও দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় অবৈধ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের কেন্দ্রস্থল তবে পর্যটকদের উপর এমন আক্রমণের ঘটনা বিরল। কেননা স্থানীয়দের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পর্যটন।
হামলার পরপরই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়া জূড়ে কোনও প্রমাণ ছাড়াই এই হামলার সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক যুক্ত করতে শুরু করে। এই ঘটনায় অতিরঞ্জিত ও মনগড়া তথ্য দিয়ে মুসলিমদের টার্গেটে পরিণত করা হয়। পর্যটক হত্যাকে কেন্দ্র করে ঝড়ের গতিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপির মুসলিম
বিদ্বেষী বয়ান প্রচারে নেমে পড়ে ভারতীয় মিডিয়া। দেশটির গোদি মিডিয়ার এই অতি উৎসাহী মুসলিমবিদ্বেষী বয়ান প্রচারে চক্রান্তের গন্ধ দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।
ভারতে সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ ধারা পরিবর্তন এবং একের পর এক নতুন নতুন আইন করে মুসলমানদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হচ্ছে। প্রতিদিনই দেশটির বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে মুসলিম নির্যাতন করা হচ্ছে। প্রায়ই লোমহর্ষক নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। যা মুসলিম বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাঝে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করছে। সর্বশেষ ওয়াকফ আইন পাস করে ভারতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উস্কে দেয়া হয়েছে। বুলডোজার দিয়ে মসজিদ, মাদরাসাসহ মুসলমানদের বাড়িঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে কাশ্মিরের বন্দুক হামলার ঘটনায় কারা ফায়দা পেতে পারে তা দিনের মত স্পষ্ট।