
এফ.এম রিপন আহম্মেদ: বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলায় ইটভাটাগুলোতে মানা হচ্ছে না ইট তৈরি ও ভাটা স্থাপন আইন।
ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে মূল্যবান বনজ ও ফলদ গাছ। ভাটার ধুলা, চুল্লির কালো ধোঁয়ার কারণে মরে যাচ্ছে আশেপাশের বিভিন্ন ধরনের গাছপালা। এতে করে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। ব্যক্তি মালিকানাধীন গড়ে উঠা ইটভাটায় কারনে নষ্ট হচ্ছে সরকারি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কও।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মাদলা ইউনিয়নের মালিপাড়া এলাকায় এবি ব্রিকস নামের ইটভাটার চারপাশে শত শত মণ গাছ স্তূপ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। গাড়িতে করে গাছ কেটে এনে রাখা হচ্ছে ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায়। লোক দেখানোর জন্য কেবল কয়েক মণ কয়লা সাজিয়ে রাখা হয়েছে ভাটার এক কোণে। তবে এসব কয়লা কখনই যাচ্ছে না ইটভাটার চুল্লিতে। চুল্লিতে যা যাচ্ছে সবই গাছের খড়ি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ভাটার কয়েকজন শ্রমিক জানান, আমরা শুরু থেকেই গাছ দিয়ে এখানে ইট পুড়ছি। আমাদেরই বা করার কী আছে, মালিকের নির্দেশেই এই গাছ পোড়ানো হচ্ছে।
শুধু এবি নয়, আশেপাশের ভাটাগুলোতেও দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে গাছ পোড়ানো হলেও প্রশাসনের কেউ কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেয়ায় দিন দিন আরও বেসামালভাবে পোড়ানো হচ্ছে গাছ।
ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহারের কথা থাকলেও অনেকেই তা মানছেন না। এসব ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে প্রকাশ্যে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।
উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শাজাহানপুরে সচল ইটভাটার সংখ্যা ২৫টি।
শাজাহানপুর ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মো: রফিকুল ইসলাম রফিক সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, শুধু ফায়ারিং সময় (ভাটার মুখে আগুন দেয়ার দিন) ‘জ্বালানি কাঠ’ পোড়ানো হয়। অন্য সময় উপজেলার সকল ইটভাটাগুলিতে কয়লা ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী গৌতম চন্দ্র চন্দ গণ মাধ্যমকে জানান, ২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে, ইট পোড়ানোর ক্ষেত্রে জ্বালানি কাঠের ব্যবহার বেআইনি।
শাজাহানপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও )মো. তাইফুর রহমান সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, ‘কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ইটভাটার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই অবৈধ ইটভাটা বন্ধ অভিযান পরিচালনা করা হবে।