বগুড়ার শাজাহানপুরে গোহাইল ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেনের বিরুদ্ধে এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে পিটিয়ে আহত করে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ উঠেছে।
আহত শিক্ষার্থী রাহাদ হোসেন রিয়াদ (১৭), শালিখা গ্রামের ফজর আলীর ছেলে এবং কলেজটির এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে গোহাইল ইউনিয়নের খাদাশ গ্রাম থেকে রিয়াদকে তুলে নেয় সন্ত্রাসীরা। এরপর তাঁকে জামাদারপুকুর তেলের পাম্পের পাশে একটি টিনের ঘরে আটকে রেখে লোহার রড, পাইপ দিয়ে মারধর করা হয়। বাম পায়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে সন্ধ্যায় পুলিশ ডেকে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়।
পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাত ১২টার দিকে তাঁকে মেডিকেলে ভর্তি করে পুলিশ। থানা সূত্র জানায়, রিয়াদকে অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেনের করা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উপজেলা পর্যায়ে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। গোহাইল ইসলামিয়া কলেজেও শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখেন তৎকালীন ইউএনও। এরপরও গত ২২ জুলাই বহিরাগত লোকজন নিয়ে কলেজে প্রবেশের চেষ্টা করেন তিনি। শিক্ষার্থীদের বাধা এবং উত্তেজনার মধ্যে তার মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা।
ঘটনার জেরে অধ্যক্ষ ২৫ জুলাই ১৪ জনের নামে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির মামলা করেন। মামলার ১ নম্বর আসামি করা হয় রাহাদ হোসেন রিয়াদকে। এ মামলায় ২ জন ছাত্রীকেও আসামি করা হয়েছে।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রিয়াদ জানান, অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেনের ইন্ধনে সন্ত্রাসী রকি, ইমরান ও সোহানের নেতৃত্বে কয়েকজন তাঁকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে। পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে হাসপাতালে নিলেও তিনি বুধবারের ইসলাম শিক্ষা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।
রিয়াদের বোন বলেন, ভাইকে মেরে থানায় আটকে রেখেছিল। আমরা জোর করে হাসপাতালে এনেছি। বিচার চাই।
এ বিষয়ে রকি, ইমরান ও সোহানের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেনের মুঠোফোনে কল করলে নারী কণ্ঠে জানানো হয়, তিনি ঘুমাচ্ছেন।
শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ফোরকান হত্যা ও চাঁদাবাজির মামলায় রিয়াদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে বর্তমানে শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।