বগুড়ার শাজাহানপুরে উচ্চ ফলনশীল জাতের জি-নাইন কলা চাষে এসেছে বাম্পার ফলন। এতে উজ্জীবিত হয়েছেন উপজেলার বামুনিয়া চাঁদবাড়িয়া গ্রামের তরুণ কৃষক ও উদ্যোক্তা মোকছেদ আলী। মাত্র ২০ শতক জমিতে ১৮০টি চারা রোপণ করেই স্বপ্ন বুনছেন লাখ টাকা আয়ের।
প্রতিটি গাছে ঝুলছে বড় বড় কাদি। কোন কোন গাছে এক মণ পর্যন্ত কলা ধরেছে বলে জানান মোকছেদ। কলার গাছে এমন ফলন দেখে আনন্দে আত্মহারা এই তরুণ উদ্যোক্তা।
কৃষক পরিবারের সন্তান মোকছেদ আলী ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে মাঠে কাজ করতেন। মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেরোতেই জীবিকার তাগিদে ঢাকা চলে যান। সেখানে কাঁচামালের ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন দীর্ঘ ১৭ বছর। পরে শহরের জীবনে倦 হয়ে ছয় বছর আগে আবারও ফিরেছেন কৃষিকাজে। নিজের জমিতে চাষ করছেন নানান ধরনের ফসল।
২০২৩ সালে টিএমএসএস আয়োজিত একটি কৃষি প্রশিক্ষণে অংশ নেন তার চাচা সাইফুল ইসলাম। প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার একটি নার্সারি পরিদর্শনে গেলে উপহার হিসেবে পান জি-নাইন জাতের তিনটি কলার চারা। সেগুলো রোপণের পর আশাতীত ফলন পান তিনি।
চাচার সেই অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মোকছেদ আলী ২০২৪ সালে ওই নার্সারিতে যোগাযোগ করে সংগ্রহ করেন জি-নাইন জাতের কলার চারা। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে ২০ শতক জমিতে রোপণ করেন চারাগুলো। এরপর থেকেই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আফতাব উদ্দিনের পরামর্শ ও নিবিড় পরিচর্যায় বাগানটি সুনিপুণভাবে গড়ে তোলেন।
মোকছেদ বলেন, প্রথমে ভয় ছিল—নতুন জাত, এত ফলন হবে তো? এখন তো দেখি প্রত্যেক গাছে এত কলা যে মনে হয় স্বপ্ন দেখছি।
সবুজ ঘন পাতায় ছেয়ে যাওয়া বাগানটিতে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন আশপাশের কৃষকরাও। অনেকেই এই জাতের কলা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, জি-নাইন একটি উচ্চ ফলনশীল ও লাভজনক কলার জাত। সঠিক পরিচর্যা হলে অল্প জমিতেও ভালো আয় সম্ভব।
মোকছেদের মতো তরুণ উদ্যোক্তারা যদি কৃষিকাজে এগিয়ে আসে, তাহলে কৃষির সম্ভাবনাময় এই খাতে আসবে নতুন দিগন্ত—এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।