বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মানিকদিপা চারমাথা এলাকায় আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকদের থেকে অবৈধভাবে খাজনা আদায়কে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ কৃষকদের সঙ্গে হাট ইজারাদার ও বিএনপি নেতার উত্তপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কৃষকেরা স্থানীয় বিএনপি নেতা ও হাট ইজারাদার শাহাদাৎ হোসেন, তার ভাই আলামিন এবং আড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মুরাদ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
একপর্যায়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে জনতা পুলিশের সামনেই ইজারাদারপক্ষের মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় মানিকদিপা চারমাথা এলাকায় আলু বিক্রির সময় প্রতি বস্তা আলুর ওপর অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের চেষ্টা করেন ইজারাদারপক্ষ। এ নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হয়। কৃষকেরা অভিযোগ করেন, গ্রামের উপর এসে অবৈধভাবে খাজনার নামে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হচ্ছিল। একপর্যায়ে কৃষকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে শাহাদাৎ হোসেন ও তার সহযোগীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন।
খবর পেয়ে প্রথমে শাজাহানপুর থানার একটি পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে উত্তেজনা প্রশমিত না হয়ে বরং আরও বেড়ে যায়। পুলিশ উপস্থিত থাকলেও জনতা ইজারাদারপক্ষের একটি কালো মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে। পরবর্তীতে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ওয়াদুদ আলম নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং অবরুদ্ধ তিনজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
স্থানীয় কৃষকেরা অভিযোগ করেন, প্রতিটি মৌসুমে ইজারাদারপক্ষ খাজনার নামে বাড়তি টাকা আদায় করে আসছে। প্রশাসনের নীরবতা এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব জুলুম দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা নিজেদের ঘামে ফলানো ফসল বাজারে আনছি, সেখানে আবার টাকা দিয়ে বসতে হচ্ছে, তারপর আলু বিক্রির সময়ও দিতে হচ্ছে খাজনার নামে জুলুম।”
এ বিষয়ে শাজাহানপুর থানার ওসি মো. ওয়াদুদ আলম বলেন, “ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”