
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নে উপজেলা প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে সড়কের পাশের সরকারি গাছ কাটার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে আমরুল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম সবুজকে। মামলায় অজ্ঞাত আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে আমরুল ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সুরুজ্জামান মাসুদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের সন্ধাই সেতু এলাকার সড়কের পাশ থেকে ৬টি সরকারি গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলেন রিয়াজুল ইসলাম সবুজ ও তাঁর সহযোগীরা। এ সময় গ্রামবাসীদের তিনি জানান, গাছ কাটার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুমতি দিয়েছেন এবং গাছগুলো মসজিদে দান করা হবে। তবে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এ বিষয়ে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ঘটনার পর ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ও ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠান এবং কাটা গাছ জব্দ করা হয়। গাছগুলো বর্তমানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
অভিযুক্ত রিয়াজুল ইসলাম সবুজ মোবাইল ফোনে বলেন, “গাছ কাটার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। গোবিন্দপুর কেন্দ্রীয় মসজিদ কমিটি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে।”
তবে গোবিন্দপুর কেন্দ্রীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস সালাম সরকার বলেন, “গাছ মসজিদে দান করা হয়েছে বলে জানি না। আমাকে বলা হয়েছিল ইউএনও ও এসিল্যান্ড অনুমতি দিয়েছেন। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে বলবো, গাছগুলো মসজিদে দান করা হয়েছে—এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিছু টাকা মসজিদে দেওয়ার কথাও বলেছিল।”
এ বিষয়ে আমরুল ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্য সচিব সানাউল হক লিটন বলেন, “সাবেক বিএনপি নেতা রিয়াজুল ইসলাম সবুজ ও তার সহযোগীরা গাছ চুরির সঙ্গে জড়িত। এমন কাজ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।”
আমরুল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রাজা বলেন, “সন্ধাই সেতু এলাকার দুই পাশে আগে প্রচুর গাছ ছিল, যা বন্যার সময় সড়ক রক্ষা করত। এখন চুরি হতে হতে প্রায় সব গাছ শেষ হয়ে গেছে।”
শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাইফুর রহমান বলেন, “উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কাউকে কোনো ধরনের অনুমতি দেয়নি। কাটা গাছ জব্দ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। ঘটনায় মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
শাজাহানপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ইনস্পেক্টর) মাসুদ করিম বলেন, “ইউএনও’র নির্দেশে আমরুল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় রিয়াজুল ইসলাম সবুজকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে।”