প্রায় ৬১ বছরের পুরাতন নান্দনিক ও অসাধারণ স্থাপত্যে ভরা একটি মসজিদ খুলনার জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া দারুলউলুম। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেই ভিড় জমাচ্ছে স্থানীয়রা এবং ছাত্ররা। নামাজের ওয়াক্ত ব্যতীত অনেকেই আসেন মসজিদটি দেখার জন্য। সারাক্ষণই লোকজনের জমজমাট লেগেই থাকে। মসজিদটি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মুসলমান পাড়ায় অবস্থিত। মসজিদটি সংক্ষেপে দারুলউলুম নামে বেশি পরিচিত। ১৯৬৭ সালে সমাজসেবক আবদুল হাকিম জমাদ্দারের উদ্যোগে মাওলানা মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠা করেন।
মুসলিম পাড়ার সরু গলি দিয়ে ঢুকলেই বিশাল মসজিদ দারুলউলুম ও তার সামনে রয়েছে বিশাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসার প্রাঙ্গনে দেখা মেলে ছোট-বড় বিভিন্ন ছাত্রদের। সেখানে পরিভ্রমণ করতে গিয়ে একজন প্রাক্তন ছাত্রের সাথে দেখা। তিনি বলেন, তার সৌভাগ্য হয়েছে দীর্ঘ ৭ বছর এই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করার। এই মসজিদটি তালাবওয়ালা জামে মসজিদ নামেও অনেকে চেনেন। তিনি আরো বলেন, আব্দুল হাকিমের মৃত্যুর পরে তার পুত্র আব্দুল জব্বার পরিচালনা করেন মাদ্রাসাটি। মাদ্রাসায় পড়াকালীন স্মৃতি মনে করে তিনি বলেন, এখানকার পড়ালেখা অনেক উন্নতমানের এবং তার অনেক গভীর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে মাদ্রাসাটিতে।
সম্পূর্ণ সাদা টাইলসে তৈরি মিনারটির উচ্চতা ২২৬ ফুট, দেখে মনে হবে যেন আকাশ ছুঁয়েছে। মসজিদটির সামনে ও পেছনে রয়েছে অসংখ্য দেশি-বিদেশি বনসাই, সুপারি, নারকেল গাছ, মনোমুগ্ধকর আর্কিড জাতের গাছ। যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে এবং মনে সতেজতা এনে দেয়। ১৫ টি গম্বুজ ও অসংখ্য মিনার রয়েছে। প্রবেশ পথে দেখা যায় পবিত্র আল-কোরান সাদৃশ্য গেট। মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসায় প্রায় দেড় হাজার ছাত্র পড়ালেখা করে। তিনতলা মসজিদটিতে রয়েছে অসংখ্য ঝাড়বাতি যেগুলো দুবাই ও ভারতের রাজস্থান থেকে আনা। ওযু করার জন্য রয়েছে সুন্দর ব্যবস্থা। নারকেল ও তালগাছের তৈরি চেয়ার রয়েছে মুসল্লীদের জন্য।
স্থানীয় লোকজন ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা পর্যটকরা আসে মসজিদটি দেখতে। মসজিদটির নান্দনিকতা ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে সেই আশায় স্থানীয়দের। মসজিদের পিছনে রয়েছে একটি খামার। যেখানে দর্শণার্থী দেখতে পাবে দেশি-বিদেশি গরু, হাতি, ঘোড়া,উট, হাতি এবং হরিণ। যা মসজিদটির সৌন্দর্য এবং নান্দনিকতাকে আরও বেশি ফুটিয়ে তুলেছে। সাদা রংয়ের মসজিদটি যেন নগরীর ভিতরে একটি শান্তির প্রতীক।
লিখেছেন -
ফাতেমা তুজজোহরা
শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগ
নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি খুলনা।