মোঃ সজল মাহমুদ, বেতাগী (বরগুনা):
বাংলাদেশে এক বছরের বেশি বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া। বিগত ১৯ বছরের গবেষণায় সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর প্রতিরোধে যে কয়টি কার্যকরী সমাধান আবিষ্কার ও বাস্তবায়ন করেছে তার মধ্যে 'সুইমসেফ' জীবনের জন্য সাঁতার- অন্যতম। এ কার্যক্রমে ৬-১০ বছর বয়সী শিশুদের সাঁতার শেখার ২১ টি ধাপ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে পানিতে ডুবে যাওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা এবং তাদের উপস্থিতিতে কেউ পানিতে ডুবে গেলে ডাঙায় থেকে তাকে উদ্ধার করার কৌশল রপ্ত করে।
পানিতে ডুবে মৃত্যুর হিসেবে বরিশাল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিভাগ। এই বিভাগের দুই জেলা পটুয়াখালী, বরগুনার ০৩ উপজেলা কলাপাড়া, তালতলী, বেতাগীতে 'ভাসা' প্রকল্প পরিচালনা করে আসছে সিআইপিআরবি। আর্থিক সহযোগিতা করে আসছে রয়েল ন্যাশনাল লাইফবোট ইনস্টিটিউশন (আরএনএলআই), ইউকে ও প্রিন্সেস শার্লিন অফ মোনাকো ফাউন্ডেশন। ভাসা প্রজেক্ট-২ এর সুইমসেফ কার্যক্রমের অধীনে ২০২৪ সালে ১০ হাজার শিশুকে স্থানীয় সাঁতার প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বেতাগীর ৩৫০০ হাজার শিশুকে এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। উপজেলার ইউনিয়নগুলো থেকে সাঁতার প্রশিক্ষণ এলাকা, পুকুর ও প্রশিক্ষক নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন করেছে 'সুইমসেফ' টিম। তারা কমিউনিটির অংশীজনদের মতামত ও পরামর্শ জানতে ইউনিয়ন ইনজুরি প্রিভেনশন কমিটি, ভিলেজ ইনজুরি প্রিভেনশন কমিটি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করেছে। অংশীজনদের দেয়া তথ্য ও পরামর্শের ভিত্তিতে বাছাই সংক্রান্ত কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় পুকুর গুলো থেকে ২২ টি পুকুরকে সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। সাঁতার প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে ৪৪ জন। একই সাথে শেষ হয়েছে সাঁতার প্রশিক্ষণ পাওয়ার উপযোগী শিশুদের তালিকা তৈরীর কাজগুলো। ১ জুলাই থেকে লোকাল সুইমিং ইনস্ট্রাক্টরদের (এলএসআই) ৭ দিনের মৌলিক সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।