ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিগত ১৬টি বছর দেশকে রীতিমতো চুষে খেয়েছে। তার শাসনামলে ছিলো না কথা বলার মত বাকস্বাধীনতা ছিলো না ভোটের অধিকার। তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেই হতে হতো গুম-খুনের শিকার। ফ্যাজিজমের জননী হাসিনা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে তার বেলা ফুরাবার সময়েও নির্বিচারে হত্যা করেছে ছাত্র-জনতা। তার দল আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ রীতিমতো ছাত্র-জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো অভ্যুত্থানের সেই সময়। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও শুধুমাত্র ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বহুবার আন্দোলন হয়েছে কিন্তু কার্যত নিষিদ্ধ করা হয়নি দলটিকে।
আবারও নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবীতে। যে আন্দোলনের নেতৃত্বে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়ক ও এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। গতরাত ১০ টার পর থেকেই প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন যমুনার সামনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবীতে তার নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি ছাড়াও, ইসলামী ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইনকিলাব মঞ্চ, আপ বাংলাদেশ, অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন, জুলাই ঐক্যসহ আরো কিছু সংগঠন অংশ নেয়। এসময় তাদের হাতে ছিল ব্যানার, প্ল্যাকাড, নানা স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। রাত পেরিয়ে গেলেও সেখানেই অবস্থান নেন তারা এমনকি ফজরের নামাজও সেখানেই আদায় করেন আন্দোলনকারীরা। হাসনাত আব্দুল্লাহ এখানে ঘোষণা দিয়েছেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘোষণা না নিয়ে বাড়ি ফিরবেন না।’
শুধু রাজধানী ঢাকা নয় গতকাল থেকেই মূলত দেশের বিভিন্ন জায়গায় আওয়াজ উঠেছে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের। হত্যা মামলার আসামী সাবেক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দুইবারের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাওয়ার সেইফ এক্সিট দেওয়ার পরই উত্তাল হতে থাকে প্রেক্ষাপট। এ ঘটনায় নিজের ফেসবুকে পোষ্ট করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। দেশের সাধারণ নেটিজেনদেরও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় বিষয়টি নিয়ে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্টকে সেইফ এক্সিট দেওয়ার পিছনে জড়িতদের বহিস্কারও করা হয়েছে ইতিমধ্যে।
এদিকে হঠাৎ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবীতে আন্দোলনের কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের কিছু দোসর সেই সময়ে সক্রিয় বড় পর্যায়ের নেতারা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেকেই দেশে থাকলেও গ্রেফতার হচ্ছেন না। আবার যারাও গ্রেফতার হয়েছেন তাদের বিচার প্রক্রিয়াও ঠিকভাবে এগোচ্ছে না। অনেকেই পেয়ে যাচ্ছেন জামিনও। আর ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ যা করেছে এরপর বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও দলটিকে রাজনীতিতে আর দেখতে চায় না। মূলত এসব কারণেই গর্জে উঠেছে আবার আমজনতা, আন্দোলন হচ্ছে দেশজুড়ে।