মানুষ বয়সের ভারে কাজ থেকে অবসর নিলেও শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রবীণ চিকিৎসক ডা. আব্দুল বারী যেন ব্যতিক্রম এক উদাহরণ। বয়স ১২০ বছর হলেও তিনি এখনো সক্রিয়। চশমা ছাড়াই সাবলীলভাবে কোরআন তেলাওয়াত করেন। প্রতিদিন ২–৪ মাইল হেঁটে চলাফেরা করতে পারেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করেন দাঁড়িয়ে।
প্রায় ৭০–৮০ বছর ধরে তিনি চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। ব্রিটিশ আমলের পর ন্যাশনাল ডাক্তারি পাশ করে চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তখন তার ফার্মেসীতে রোগীর দীর্ঘ লাইন লেগে থাকত। অনেক রোগী সুস্থ হয়ে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ গরু উপহারও দিয়েছেন।
বর্তমানে তিনি ছেলে শাহজাহানের ফার্মেসীতে বসেই রোগী দেখেন ও ওষুধ বিক্রি করেন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। পরিবারের নিষেধ সত্ত্বেও তিনি প্রতিদিনই সেখানে যান। কারণ জানতে চাইলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, একাকী বসে থাকতে ভালো লাগে না। তাই ফার্মেসীতে এসে মুরব্বিদের সঙ্গে আড্ডা দিই, নামাজ পড়ি, সময় কাটাই।
ডা. বারীর প্রথম স্ত্রীর ঘরে ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল, দ্বিতীয় ছেলে সাংবাদিক, তৃতীয় ছেলে ওষুধ ব্যবসায়ী, চতুর্থ ছেলে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী এবং ছোট ছেলে বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য—এই বয়সেও তার একটি দাঁতও পড়েনি, শরীর ঝুঁকেনি, শক্তি সামর্থ্যও অটুট। কোনো দিন গাড়ি না পেলে নিজেই হেঁটে ১ মাইল দূরে উপজেলার প্রতাবনগর গ্রামের বাড়ি চলে যান।
তার বড় ছেলে আবু বকর বলেন, বয়সের কারণে আমরা চাই তিনি বিশ্রাম নিন। কিন্তু তিনি যতদিন হাঁটাচলা করতে পারবেন, ততদিনই প্রতিদিন মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় করবেন।
সচেতন মহল বলছে, এই বয়সে এমন সুস্থ জীবনযাপন আল্লাহরই বিশেষ নিয়ামত। তারা ডা. আব্দুল বারীর দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন।