৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক-বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায় বহাল

spot_img

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাস বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ই বহাল রাখেন।

গত বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দিয়ে মামলার সব আসামিকে খালাস দেন। এরপর চলতি বছরের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ সুপ্রিম কোর্ট ওই আপিলের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয়। সেদিনের সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের বহু নেতা-কর্মী।

এই ঘটনায় পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। প্রথমে তদন্তে গাফিলতি ও ‘জজ মিয়া নাটক’ তৈরির অভিযোগ ওঠে। পরে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। এরপর ২০০৮ সালে ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে আরও ৩০ জনকে যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ মামলার রায় ঘোষণা করে। ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বিচারিক আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। পাশাপাশি ডেথ রেফারেন্সের শুনানিও শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানির পর ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন এবং সব আসামিকে খালাস দেন। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, এ মামলার তদন্ত সঠিক ও নিরপেক্ষ হয়নি। এ কারণে দণ্ড টেকসই হয়নি এবং সন্দেহের বাইরে আসামিদের দায় প্রমাণ করা যায়নি। আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, এত ভয়াবহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়াটা দেশের জন্য দুঃখজনক।

হাইকোর্টের দেওয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। পরে আপিল বিভাগে শুনানি হয়। অবশেষে আজ আদালত সেই আপিল খারিজ করে দেন। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ই চূড়ান্তভাবে বহাল থাকে।

এই রায়ের ফলে আলোচিত এই মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পরিণতি হলো। প্রায় দুই দশক ধরে চলা এই মামলায় দেশের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। এখন সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের মাধ্যমে মামলার বিচারিক অধ্যায়ের শেষ টানা হলো।

সর্বাধিক জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ