৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বগুড়ায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৭ লাখ ৩৫ হাজার পশু

spot_img

ঈদুল আজহা সামনে রেখে বগুড়া জেলায় কোরবানির জন্য ৭ লাখ ৩৫ হাজার পশু প্রস্তুত রয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলাতে বিক্রি হতে পারে এসব পশু। গত বছরের চেয়ে এ বছর বেড়েছে খামারির সংখ্যাও। ঈদকে ঘিরে খামারিরা এখন লাভের আশায় দিন গুনছেন।

বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১২টি উপজেলায় ৪৮ হাজার ৪৫৩ জন খামারিসহ ব্যক্তি পর্যায়ে এসব পশু পালন করা হচ্ছে। গত বছর বগুড়ায় ৪৪ হাজার ৩২৯ জন খামারি ছিলেন, যারা ৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৯৭টি কোরবানিযোগ্য পশু পালন করেন।

এবার রয়েছে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪১৫টি গবাদিপশু। কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজার ৪১টি গরু, ৪ লাখ ২২ হাজার ৬৫৭টি ছাগল, ৩৯ হাজার ৮৫১টি ভেড়া ও গাড়ল এবং ২ হাজার ২৬৬টি মহিষ রয়েছে।

প্রস্তুতকৃত পশুর সঙ্গে এবার বেড়েছে চাহিদাও। গত বছর পশুর চাহিদা ছিল ৭ লাখ ৪ হাজার ৪৬০টি। চলতি বছর জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুতকৃত পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে ২৯ হাজার ১৫৫টি।

জানা যায়, ওষুধ ও গো-খাদ্যের অতিরিক্ত দামের কারণে প্রস্তুতকৃত পশুর প্রত্যাশিত দাম নিয়ে শঙ্কায় আছেন খামারিরা। এদিকে কুরবানির পশুর দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সংকটে পড়বেন মধ্যবিত্ত কোরবানিরদাতারাও। সবমিলিয়ে চলতি বছরের কোরবানির পশু প্রস্তুতকারী খামারি ও কোরবানি দিতে আগ্রহী ব্যক্তিরা বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ন্যায্য মূল্যের আশা করছেন।

বগুড়া জেলায় প্রাকৃতিক খাদ্য দিয়েই অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ান, আমেরিকার ব্রাহমা ক্রস, ভারতীয় শাহীওয়াল, নেপালের গীরসহ দেশীয় জাতের গরু-ছাগল পালন করে এখন ভালো দামের প্রত্যাশা করছেন খামারিরা। প্রতিবছরই ঈদ এলে গরু বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন তারা। ছোট-বড় খামারের পাশাপাশি ঈদকে সামনে রেখে ৪ মাস ধরে অনেকেই গরু মোটাতাজা করে থাকেন।

খামারিরা বলছেন, চলতি বছর পশুখাদ্যের দাম ও শ্রমিকের মজুরিসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় পশুপালন খরচও বেড়েছে কয়েক গুণ। এতে করে কোরবানির পশুর দাম গত বছরের চেয়ে বেশি হবে।

বগুড়া সদর উপজেলার দোবাড়িয়া গ্রামের খামারি ফারুক আহম্মেদ জানান, ২০১৭ সালে ৪টি গরু ও ৬টি ছাগল দিয়ে খামার শুরু করেন তিনি। এরপর প্রতি বছর তার খামারে গবাদিপশু বাড়তে থাকে। বর্তমানে তার খামারে কোরবানিযোগ্য গরুর সংখ্যা ৪৫টি ও ছাগলের সংখ্যা ৬২টি ।

কোরবানির জন্য তিনি ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়াল, নেপালি গীর ও দেশি ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন। খামারে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা থেকে সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকা মূল্যের গরু রয়েছে।

ছাগলের মধ্যে রয়েছে যমুনা পরী, তোতা পরী, হরিয়ানা ও দেশি ব্ল্যাক বেঙ্গল, প্রকারভেদে যার মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া দেশি জাতের ছাগলও কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, যেগুলোর মূল্য ২০ হাজার টাকা করে।

কোরবানির পশু ছাড়াও তার খামারে রয়েছে ৪টি দুধেল গাভী, যেগুলো থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০ লিটার দুধ পান তিনি। ছয়জন শ্রমিক তার খামার দেখাশুনা করেন। প্রতি মাসে খামারের পেছনে তার সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। বছর শেষে তিনি আয় করেন ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা।

বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোছা. নাছরিন পারভীন জানান, গত বছরের চেয়ে এবছর বগুড়ায় প্রস্তুতকৃত পশুর সংখ্যা বেড়েছে। এবার জেলায় যে পরিমাণ কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে, তার চেয়ে প্রস্তুতকৃত কোরবানির পশুর উদ্বৃত্ত রয়েছে ২৯ হাজার ১৫৫টি।

তিনি জানান, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বগুড়ায় পশু প্রতিপালনের হার বেড়েছে। তাই কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না এ জেলায়।

এছাড়া বগুড়ায় গবাদিপশু মোটাতাজাকরণে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ যেন ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার না করেন, সেজন্য প্রচার চালানো হচ্ছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

সর্বাধিক জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ