
বগুড়ার শাজাহানপুরে অবৈধভাবে খাজনা আদায়ের অভিযোগে জনতার হাতে আটক চারজনকে ছেড়ে দিয়ে উল্টো সাংবাদিক- কৃষক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নামে মামলা নিয়েছে থানা পুলিশ।
গত শনিবার (৩ মে) রাতে আব্দুল ওহিদ মুরাদ নামের এক ব্যক্তি শাজাহানপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
জানা গেছে, উপজেলার নয়মাইল এলাকার আলু ব্যবসায়ী শাহাদত হোসেন বাংলা ১৪৩২ সনের জন্য আড়িয়া বাজার ইজারা নেন। গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় তিনি তার তিন সহযোগীকে নিয়ে মানিকদিপা গ্রামে যান, যা বাজার এলাকা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে। সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাজনা আদায়ের চেষ্টা করলে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের অবরুদ্ধ করেন।
অবরুদ্ধরা হলেন বগুড়া জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও ইজারাদার শাহাদত হোসেন (৪০) , তার সহযোগী শহিদুল ইসলাম (৪৫),্ও্য়াহিদ কুরাইশি মুরাদ (৪৫) এবং আনোয়ার হোসেন (৩০)।
এ সময় উত্তেজিত জনতা শাহাদতের প্রাইভেট কারেও ভাঙচুর চালায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ,উত্তেজিত জনতাকে আশ্বস্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায়। এরপর জনগণ তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তবে পরে পুলিশ তাদের থানায় না নিয়ে পথেই ছেড়ে দেয়।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর, ইজারাদারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় দৈনিক আমার সংবাদের শাজাহানপুর প্রতিনিধি সাংবাদিক নাজিরুল ইসলামসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করে।
মানিকদিপা গ্রামের কৃষকরা জানান, বাজারে খাজনা আদায় বৈধ হলেও ইজারাদারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাজনা তোলা অবৈধ। তারা বলেন, বর্তমানে আলুর দরপতনের কারণে কৃষকরা বিপুল লোকসানে রয়েছেন। এর ওপর বাড়তি খাজনা নামে চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ তারা।
সাংবাদিক নাজিরুল ইসলাম সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, “আমি ঘটনার দিন উপস্থিত থেকে ফেসবুক লাইভ করি, এটাই হয়তো আমার অপরাধ।”
স্থানীয় আলু ব্যবসায়ীরা জানান, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাদের হয়রানির চেষ্টা চলছে। তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওয়াদুদ আলম সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলাটি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে। কাউকে অহেতুক হয়রানি বা গ্রেফতার করা হবে না।”
এ বিষয়ে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাইফুর রহমান জানান, “হাট-বাজার ছাড়া অন্য কোথাও খাজনা আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ। এমন হলে ইজারা বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অপরদিকে এ ঘটনায় শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সজিবুল আলম সজিব তার ভারীফাই আইডিতে জানান,”,আওয়ামী দোসর শাজাহানপুরের মুসা বিন শমসের খ্যাত উত্তরবঙ্গ আলু বীজ সিন্ডিকেটের গডফাদার ডজন খানেক নব্য হাট ইজারাদার শাহাদত হোসেনের প্রতিনিধি মুরাদ কোরাইশী বাদী হয়ে শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের সদস্য নাজিরুল ইসলাম নাজিরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করায় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে মামলা থেকে তার নাম অব্যহতি দাবি জানায়।”