৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
spot_img

ফুলবাড়ীতে সার্বজনীন পেনশন কিম বিষয়ক উদ্বুদ্ধকরণ সভা

 

 

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে সার্বজনীন পেনশন স্কিম বিষয়ক উদ্বুদ্ধকরণ আলোচনা সভা। ১০ মার্চ রবিবার সকাল ১১ টায় উপজেলা পরিষদ হল রুমে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রশাসন আলোচনা সভার আয়োজনে করে।

বর্তমান সরকার দেশের জনগণের মধ্যে যারা পেনশনের আওতায় ছিলেন না তাদের জন্য সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছেন, যাতে করে তারা সম্মানজনক ভাবে বাঁচতে পারেন। এ স্কিমে অংশগ্রহণ তাদেরকে সামাজিক মর্যাদার পাশাপাশি আর্থিক সুরক্ষা দিবে। সারাদেশের ন্যায় ফুলবাড়ীতেও সার্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ আলোচনা সভা।

উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহম্মেদ। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার। এছাড়াও ফুলবাড়ী মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক ইউনুস আলী আনন্দ, ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলন, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক জাকারিয়া মিয়া, ফুলবাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক মোঃ নাজমুল হাসান, সাংবাদিক মাইদুল ইসলাম, সাংবাদিক এরশাদুল হক সহ ফুলবাড়ীর অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টটের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের “সর্বজনীন পেনশন স্কিম ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ এর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহম্মেদ। তিনি বলেন দেশের জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সমাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে এবং ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে নির্ভশীলতার হার বৃদ্ধি পাবে বিবেচনায় নিয়ে মহান জাতীয় সংসদ কর্তৃক “সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩” পাশ করা হয়েছে এবং গত ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ মহামান্য রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভের পর আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।

উক্ত আইনের আলোকে গঠিত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি করে ১৮ (আঠারো) বৎসর তদূর্ধ্ব বয়স হইতে ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর বয়সি সকল বাংলাদেশি নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রণ করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, বিশেষ বিবেচনায় ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর উর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সেই ক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হইতে নিরবিচ্ছিন্ন ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন সেই বয়স হতে আজীবন পেনশন প্রাপ্ত হবেন।

বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীগণ এ কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্ত হইতে পারবেন। প্রত্যেক চাঁদাদাতার জন্য একটি পৃথক ও স্বতন্ত্র পেনশন হিসাব থাকবে। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ (পচাঁত্তর) বৎসর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ (পঁচাত্তর) বৎসর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্ত হবে ; চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান করিবার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে, জমাকৃত অর্থ ৮.৫০% হারে মুনাফাসহ তাহার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।

এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহম্মেদ আরোও বলেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ এর আলোকে মোট ০৪ (চার)টি স্কিমে পেনশন সুবিধা প্রদান করা হবে। যার মধ্যে প্রবাস স্কিমে বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যে কোন বাংলাদেশী নাগরিক তার অভিপ্রায় অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধের শর্তে নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান পূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রবাস হতে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর সমপরিমাণ অর্থ দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করাসহ প্রয়োজনে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন। পেনশন স্কিমের মেয়াদ পূর্তিতে পেনশনার দেশীয় মুদ্রায় পেনশন প্রাপ্য হবেন।

এছাড়াও, প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক ”সুরক্ষা” স্কিমে তাঁর পরিবারের ১৮ বা তদূর্ধ্ব এক বা একাধিক সদস্যের (যেমন স্বামী, স্ত্রী, বাবা, মা, ভাই, বোনের) জন্য আবেদন করে বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা প্রদান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে তিনি যার জন্য পেনশনার অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করবেন তাঁর এনআইডি, ব্যাংক হিসাব নম্বর, এবং নমিনির তথ্য প্রদানপূর্বক নিবন্ধন করবেন।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রগতী স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে উহার কর্মচারীগণের জন্য এই স্কিমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার ৫০% কর্মী এবং বাকী ৫০% প্রতিষ্ঠান প্রদান করবে। কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ না করলেও, উক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোন কর্মচারী নিজ উদ্যোগে এককভাবে এ স্কিমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।

কৃষক, রিক্সাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতিসহ সকল অনানুষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান পূর্বক সমতা স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
সমতা স্কিমের নিশ্চয়তা, সরকার দেবে সহায়তা স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক সময়ে সময়ে প্রকাশিত আয় সীমার ভিত্তিতে দারিদ্র্য সীমার নিম্নে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিগণ (যাহাদের বর্তমান আয় সীমা বাৎসরিক অনুর্ধ্ব ৬০(ষাট) হাজার টাকা) তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং সমতা স্কিমে কর্তৃপক্ষ বিধি অনুসারে সমপরিমাণ অর্থ জমা করবে।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহম্মেদ জানান, আগ্রহী ব্যক্তি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এবং এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন সর্বাতক সহায়তা করবেন।

 

সর্বাধিক জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ