৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

জলে ‘স্থবির’ রাজধানী

spot_img

ভোর থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমে নৌকা চলার মতো অবস্থা তৈরী হয়। এতে বিভিন্ন প্রয়োজনে বের হওয়া নগরবাসী ও শ্রমজীবী মানুষ প্রচণ্ড দুর্ভোগে পড়েন। রাস্তাগুলো জলমগ্ন হওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। কোনো কোনো এলাকায় যান চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। জলমগ্নতার ফলে মহানগরজুড়ে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়। স্থবির হয়ে পড়ে জনজীবন। নগরবাসী পড়েন প্রচণ্ড দুর্ভোগে।

ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবার সকালে বাইরে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা অন্য দিনের চেয়ে কম ছিল। তবে সকালে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা থাকায় এতে অংশগ্রহণকারীদের বিপাকে পড়তে হয়। বৃষ্টির সঙ্গে যানবাহনের স্বল্পতায় পড়তে হয় অনেককে। সকাল ৯টা থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে অনেকেই যথাসময়ে বাসা থেকে বের হতে পারেননি। আবার এ সুযোগে সিএনজি-রিকশাচালকরা ভাড়া দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাধ্য হয়ে বেশী ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে হয়েছে তাদের।

আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ৬ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১৩০ মিলিমিটার। এটা চলতি বর্ষা মৌসুমের স্বাভাবিক অবস্থায় রাজধানীতে এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টি। আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময় গত ২৭ মে রাজধানীতে এক দিনে সবচেয়ে বেশী বৃষ্টি হয়েছিল ২২৪ মিলিমিটার। সেটি মৌসুমের স্বাভাবিক বৃষ্টি নয়, তা ছিল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবজনিত বৃষ্টি।

প্রচণ্ড বৃষ্টিতে রাজধানীর বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় অনেক সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ফকিরেরপুল, নয়াপল্টন, বায়তুল মোকাররম, তোপখানা রোড, মৎস্য ভবন, কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর, মালিবাগ মোড়, আরামবাগ, প্রগতি সরণী, নিউমার্কেট, ধানমন্ডির রাপা প্লাজা, মিরপুরের রোকেয়া সরণি, পুরোনো ঢাকার দয়াগঞ্জ মোড়, বংশাল, নিমতলীর টয়েনবি সার্কুলার রোড জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

নেওয়াজ কবির জানিয়েছেন, নিয়ম অনুসারে প্রতি তিন ঘণ্টা পরপর বৃষ্টি পরিমাপ করা হয়। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৬০ মিলিমিটার। পরের তিন ঘণ্টায় পরিমাণ আরো বেড়েছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৭০ মিলিমিটার। সব মিলে ৬ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড ১৩০ মিলিমিটার। রাজধানীজুড়েই গতকাল ভোর থেকে মৌসুমের স্বাভাবিক ভারী বৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ নেওয়াজ কবির বলেন, বৃষ্টি পুরোপুরি থেমে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। থেকে থেকে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টি ঝরতেই থাকবে রাজধানীজুড়ে।

আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজধানীসহ প্রায় সারা দেশেই বৃষ্টি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশী বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারে ৩০৯ মিলিমিটার। এ ছাড়া সন্দ্বীপে বৃষ্টি হয়েছে ২১৯ মিলিমিটার, সীতাকুণ্ডে ১০২ মিলিমিটার।

আবহাওয়া অফিস জানায়, মৌসুমী বায়ু এখন অতিমাত্রায় সক্রিয় থাকার কারণেই এ ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এ মৌসুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ এবং ভারতের আসাম হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। বাংলাদেশ ও বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু অতিমাত্রায় সক্রিয় থাকায় উপকূলীয় এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে। দেশের ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে চলেছে।

সর্বাধিক জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ