
নাজিরুল ইসলাম :
দীর্ঘদিন যাবত দুই পায়ে হিপ জয়েন্ট ব্যাথা জনিত দূরারোগ্য রোগে ভুগছেন এক অসহায় ভ্যান চালক পিতার মেধাবী মেয়ে উম্মে কুলছুম (১৯)। তার বৈবাহিক অবস্থা অবিবাহিতা। সে বগুড়ার শাজাহানপুরের আড়িয়া ইউনিয়নের মানিকদিপা উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে। আব্দুল কুদ্দুস পেশায় একজন ভ্যান চালক। অভাবের সংস্বারে অসুস্থ মেয়ে উম্মে কুলছুমের চিকিৎসার খচর বহন করা একজন ভ্যান পিতার কাছে এখন বড়ই দূঃস্কর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশেষে নিরুপায় হয়ে মেয়েকে বাঁচাতে সাহায্য কামনা করেছেন সমাজের দানশীল বৃত্তবান ব্যক্তিদের কাছে।
কুদ্দুসকে সাহায্য পাঠাতে পারবেন তার ব্যক্তিগত ফোন ০১৭৫৬-২৭৪৮৮৩ (বিকাশ ও নগদ) পারসোনাল নাম্বারে। অথবা তার নিকটতম বিশ্বস্ত ব্যক্তির ফোন ০১৭৪৪-৪০১২৯৬ ও ০১৯১৯-৫৪২৯৯৩ নাম্বারের বিকাশ পারসোনাল একাউন্টে।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, মেয়েটিকে পর্যায়ক্রমে দুইটি অপারেশন করলে আবারও পূর্বের মত সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে। অন্যথায় মেয়েটি পঙ্গু হয়ে যাবে। এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও আছে। ডাক্তার বলেছেন দুটি অপারেশনে চিকিৎসা বাবদ প্রায়ই ৫ লাখ টাকা হলে অপারেশনগুলো করা যাবে। এতে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন ডাক্তারগণ। এত টাকা জোগাড় করতে দূঃশ্চিন্তায় পড়েছেন ভ্যান চালক আব্দুল কুদ্দুস। এদিকে অসুস্থ মেয়েসহ সংস্বারে রয়েছে তার ১০ বছর বয়সী স্কুলপড়ুয়া এক ছেলে ও স্ত্রী। ভ্যান চালক কুদ্দুসকে মেয়ের চিকিৎসা খচর বহন সহ ছোট ছেলের লেখাপড়া ও সংস্বারের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জানাগেছে, মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণিতে অন্যায়নরত অবস্থায় এই রোগে আক্রান্ত হয় কুলছুম। সে মানিকদিপা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০২০ সালে এসএসসি এবং ২০২৩ সালে সরকারি কমর উদ্দিন ইসলামীয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়। বর্তমানে কুলছুম লেখাপড়া বন্ধ করে বিছানায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন হল। এক পর্যায়ে মেয়ের চিকিৎসা অন্যদিকে সংস্বারের খরচ বহনের পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যায় কুলছুমের লেখাপড়া।
কুলছুমের পিতা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমি সামান্য একজন ভ্যান চালক। মাথা গোঁজার ঘর ছাড়া আমার আর কোন জায়গা জমি নেই। মেয়েটার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শিখে সরকারি চাকুরী করবে। কোলে করে কোন রকমে পরীক্ষা কেন্দ্রে নেয়ায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে সক্ষম হয়। আল্লাহর অশেষ রহমতে সে দুটি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছে। হঠাৎ অসুস্থ হওয়াই তার স্বপ্ন যেন এখন নিমিষেই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। বিগত চার বছরের অধিক সময় হলে বিছানা ছাড়া তার আর কোন চলাফেরা করার জায়গা নাই। ডাক্তারের পরামর্শে মেয়েকে বাঁচাতে আমি সমাজের সকল বৃত্তবান দানশীল ব্যক্তির কাছে সাহায্য প্রার্থী।
এবিষয়ে শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রভাষক সোহরাব হোসেন ছান্নু বলেন, কুদ্দুসের মেয়ের অসুস্থতার খবর পেয়েছি। সে দীর্ঘদিন যাবত দুই পায়ের হিপ জয়েন্ট ব্যাথা দূরারোগ্য রোগে ভূগছে। যা অপারেশন করলে সে আবারও সুস্থ হবে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। তার মেয়ের চিকিৎসা বাবদ আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।