৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও আলোচনায় আজাদ হোসেন

spot_img

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তফশিল এখনো ঘোষণা না হলেও চারিদিকে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। এই হাওয়া লেগেছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছাড়িয়ে ভোটারদের মাঝেও। সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন গত বছরের ৫ই আগস্ট পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর নির্বাচনের দিকে এগুচ্ছে দেশ। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে পারে নির্বাচন।

সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলঙ্গা) আসনে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকাও একেবারে ছোট নয়। এই আসনে বিএনপির অন্তত ৫জন মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে রয়েছেন। এর মধ্যে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সারা ফেলেছেন উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মোঃ আজাদ হোসেন।

জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলা ও সলঙ্গা নিয়ে গঠিত এই সংসদীয় আসন। সব রাজনৈতিক দলের কাছেই আসনটির গুরুত্ব অনেক বেশি। এই উপজেলার রাজনীতিতে যে ক’জন কর্মীবান্ধব, জনপ্রিয়, সৎ ও ত্যাগী নেতা রয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সদস্য সচিব মোঃ আজাদ হোসেন। তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রতি অবিচল আনুগত্য রেখে জেল, জুলুম, হামলা-মামলা উপেক্ষা করে আজও মাঠে টিকে রয়েছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে ৭০টিরও বেশি মামলা ঘাড়ে নিয়ে ২৬ বার কারাবরণ করেছেন তৃণমূল কর্মী বান্ধব এই নেতা।

দল ও দেশের জন্য নিঃস্বার্থ আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাওয়া নেতা আজাদ হোসেন এবার সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলঙ্গা) সংসদীয় আসনের এমপি হিসেবে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় নেমেছেন মাঠে। তাঁর প্রিয় উল্লাপাড়াকে মাদক-সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত করে “গ্রীণ উল্লাপাড়া” হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন গণসংযোগ।

রাজনৈতিক জীবনের উত্থান, তৃণমূলের সাথে সম্পর্ক, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা এবং ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনার কথা জানান।

আজাদ হোসেন বলেন, ‘‘আমার বাবা শরাফত আলী ছিলেন উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। আমি ছাত্র অবস্থাতেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রদলে যোগ দেই। উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম, যুবদলের আহবায়ক ছিলাম, সেই সঙ্গে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি পদেও দায়িত্ব পালন করেছি। এরপর পৌর বিএনপির আহবায়কের হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। একবার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই এবং পর পর দুবার সদস্য সচিবের দায়িত্বে ছিলাম। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আমার বাবা ও আমি দলকে অনেক দিয়েছি। আমরা কিছু পাওয়ার জন্য দল করি না। এখন উল্লাপাড়াবাসীর প্রত্যাশা তারা আমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চায়। আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছি। আমার ত্যাগ, আমার উপর যে নির্যাতন তা সারা উপজেলাবাসী জানেন। আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ১৬ বছর আমি রাজপথে থেকে যুদ্ধ করেছি। নেতাকর্মীকে সুসংগঠিত করেছি, ঐক্যবদ্ধ রেখেছি। মানুষের পাশে থেকেছি। আমার নেতাকর্মী যারা জেল জুলুম খেটেছে তাদের পরিবারের পাশে থেকেছি। তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমি আজ এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছি।’’

আজাদ হোসেন আরও বলেন, ‘‘খুনী হাসিনার আমলে আমি ২৬ বার জেলে গিয়েছি। ৭০টা মামলা হয়েছে আমার নামে। একটা মামলা ভেঙে তিনটা মামলা হয়েছে। ১৬ বছর আমি বাড়িতে ঘুমাতে পারি নাই। ঝাড়-জঙ্গলে রাত্রি যাপন করেছি। পুলিশের টার্গেটে ছিলাম আমি। এই আসনটা ছিল এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের। বাপ ছিল ভোট কারচুপির মাস্টারমাইন্ড আর তার ছেলে ছিল বিএনপির উপর নির্যাতনকারী। সেই নির্যাতনকে উপেক্ষা করে পুলিশের বাধা বিপত্তির মধ্য দিয়েই আমরা রাজপথে আন্দোলন করেছি। ‘‘উল্লাপাড়া বিএনপি আমার নেতৃত্বে সুসংগঠিত আছে। আমার ডাকে লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। আমাকে জামায়াত-শিবির হামলা করে আহত করে। ২৫ দিন চিকিৎসার পর যখন এলাকায় আসি, আমাকে দেখার জন্য মানুষের ঢল নামে। বিগত ৪৫ বছরের রাজনীতিতে মানুষের ভালোবাসাটা অর্জন করেছি। আমার স্বপ্ন এই উল্লাপাড়াকে একটি সবুজ উল্লাপাড়া গড়ে তোলা, শিক্ষানগরী, স্বাস্থ্যসেবা, সুশাসন সবকিছু দেওয়ার জন্য আমার যে আশা সেটা পূরণ করতে চাই। সেটা বাস্তবায়নের জন্যই এমপি প্রার্থী হয়েছি।’’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘সম্মান দেওয়ার মালিক আল্লাহ, সম্মান কেউ জোর করে নিতে পারে না। আমি বিএনপি পরিবারের একজন। তারেক রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমার পরিবারকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। আমার বাবা যখন অসুস্থ্য ছিলেন, তার শয্যা পাশে দেশনেত্রী আধা ঘণ্টারও বেশি সময় দিয়েছেন। জিয়াউর রহমান আমার বাবাকে ভাই বলে সম্বোধন করতেন।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি দীর্ঘ সময় বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়েছি। ১৬ বছর আমার ও আমার পরিবাররে উপর অকল্পনীয় নির্যাতন গেছে। ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে জীবনের মায়া না করে রাজপথে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। দলের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। আমি সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, বগুড়ায় হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে অংশ নিয়েছে। তখন অন্য কোন প্রার্থী দলকে অর্গানাইজ করে নাই। খোঁজ খবরও নেয় নি। অন্তত ৮/৯শ নেতাকর্মী জেল খেটেছে। আমি মনে করি আমার কাছেই ধানের শীষ নিরাপদ। আমি শতভাগ আশা করি আমার হাতেই ধানের শীষ আসবে। এবং আমি সর্বোচ ভোটে নির্বাচিত হবো ইনশাল্লাহ।’’

সর্বাধিক জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ