
বগুড়ায় ছাত্রলীগ নেতা সজলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সড়কে লাঠি হাতে বিক্ষোভ করেছেন ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু করে আজ বুধবার পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাপে সড়ক অবরোধ ও ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
ছাত্রলীগ নেতার নাম সজল ঘোষ। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বহিরাগত হয়েও সজল ঘোষ এক যুগ ধরে আইএইচটি ছাত্রাবাসের ২১৮ নম্বর কক্ষ দখল করে রেখেছেন। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে সজল পুরো ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন।এ ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর,মেয়ে নিয়ে আসা, আসন–বাণিজ্য, মাদক সেবন ও পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায়ের অভিযোগ আছে সজলের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগ নেতার এসব অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা লাঠি হাতে সড়ক অবরোধ করেন এবং অভিযুক্ত সজল ঘোষকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এদিক শান্ত নামে এক শিকার্থী বলেন,সজল নিয়মিত তার রুমে নিয়ে গিয়ে পা টিপে নিচ্ছিলেন।তার রুমে না গেলে মারধর
করতেন।
নান্নু মিয়া নামে এক শিক্ষার্থী জানান,সজল কলেজের বিভিন্ন প্রগ্রামের জন টাকা তুলে তা সম্পূর্ণ খরচ না করে নিজের পকেটে তুলতেন।আমাদের বিদায় অনুষ্ঠানে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা উঠলেও সজল আমাদের কাছে থেকে টাকা নিয়ে নিজে খরচ করতেন।অর্ধেক টাকা নিজের রাখতেন।তিনি আরো বলেন,সজল নিয়মিত মদ খেয়ে রাতে মাতলামি করতো।আমাদের রুমে গিয়ে রাত ৩.০০ ঘটিকায় বলতো চল ডান্স করি,ফুটবল খেলি।আমাদের হোষ্টেলে ওয়াইফাই সুবিধা দেওয়ার কথা বলে কয়েকবার চাঁদা নিয়েছে।
আমিনুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন,গতকাল দুপুরে ছাত্র হোস্টেলে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী খাবারের টাকা চাইতে গেলে সজল ঘোষ তাঁকে মারধর করেন। এরপরই শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে সড়কে অবস্থান নেন।
মারধরের শিকার আমিনুল ইসলাম বলেন, সজল বহিরাগত হয়েও দীর্ঘদিন ধরে কলেজের হোস্টেল পরিচালনা করে আসছেন। তিনি কলেজে বসে মাদক সেবন করেন। ছেলেদের হোস্টেলের সবার খাওয়ার মিলের টাকা সজল নিজের কাছে রেখে দেন। আজ বাজারের জন্য তাঁর কাছে টাকা চাইলে, তিনি দেড় হাজার টাকা দিয়ে মিল চালাতে বলেন। তখন প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকে তিনি মারধর করেন। খবর পেয়ে কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান।
মিরাজ নামে শিক্ষার্থী বলেন, সজল ঘোষ কলেজে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে সুবিধা দেন।
আরাফাত নামে এক শিক্ষার্থী বলেন,সজল আমাদের কাছে থেকে ভাইভা পরিক্ষার জন্য টাকা নিত।টাকা না দিলে আমাদেরকে ফেল করিয়ে দিত।
এদিকে সজলের কথা জানতে চাইলে বগুড়া আইএইচটির অধ্যক্ষ আমায়াত উল হাছিন বলেন, সজল ঘোস নামে আমি কাউকে চিনি না।তার বিষয়ে যে অভিযোগ এসেছে,এই বিষয়ে কেউ তাকে জানানি।এখন অভিযোগ পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।