
বগুড়া সদর উপজেলায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই পক্ষ। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের চালিতাবাড়ি গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। ওই সময় চার থেকে পাঁচটি ককটেলও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সোমবার রাতেই সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। জব্দ করেছে দেশীয় অস্ত্র ও মোটরসাইকেল।
চালিতাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখলাস হোসেন মন্ডল বাহিনীর অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ। এ বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতারে গত দুদিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও ডিসিকে স্মারকলিপি দেন তারা।
জানা গেছে, পাঁচবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা এখলাস হোসেন মন্ডল দলের নাম ভাঙিয়ে চালিতাবাড়ি গ্রামে প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে আসছিল। অসহায় মানুষকে হত্যার হুমকি, মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করছিল তিনি। আর এতে তাকে সহযোগিতা করছেন ভাতিজা সন্ত্রাসী সাগর, স্বপন, সোহেল, শিমুল, জয়, জিলহজ্জ ও গালকাটা শিহাব।
কিছুদিন পর পর চালিতাবাড়ি গ্রামের মানুষদের প্রকাশ্যে কুপিয়ে হাসপাতালে পাঠাচ্ছে এখলাস বাহিনী। তাদের হামরায় অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। এখলাস বাহিনীর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ করা হলেও প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
নির্যাতনের শিকার চালিতাবাড়ি গ্রামবাসীরা এখলাস ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতারের দাবিতে গত রোববার এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। ওই রাতেই বাহিনীর সদস্যরা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে গ্রামবাসীদের হুমকি দিয়ে আসেন। এর প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেন চালিতাবাড়ি গ্রামবাসী।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বগুড়া ডিবি পুলিশ জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সোমবার সন্ধ্যার দিকে এখলাস গ্রুপের লোকজন ও চালিতাবাড়ি গ্রামবাসীল মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এর আগে এখলাস বাহিনী মসজিদের মাইকে সংঘর্ষের ঘোষণা দেন। এ সময় তারা চার থেকে পাঁচটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
আধা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে চালিতাবাড়ি গ্রামের অন্তত আটজন আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর দুজনকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রাতেই সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে রামদা, চাপাতিসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে। এ সময় হামলায় জড়িত এখলাস বাহিনী সদস্য মন্ডলধরন গ্রামের রহমান আলী (২৭), কুটুরবাড়ি গ্রামের রোকন মিয়া (২৮) ও একই গ্রামের রকি মিয়াকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেল বলেন, এখলাস শাখারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি। তার ভাতিজাদের সঙ্গে পাশের চালিতাবাড়ি গ্রামের জনগণের বিরোধ রয়েছে।’
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে এখলাসের মোবাইলে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। এর জন্য তার মন্তব্য নেওয়া যায়নি।