৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বগুড়ায় আবাসিক হোটেল থেকে মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার

spot_img

বগুড়ার শাজাহানপুরের একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে মা ও তাঁর শিশু ছেলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁদের হত্যার অভিযোগে শিশুটির বাবাকে আটক করা হয়েছে।
রোববার (২ জুন) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বনানী এলাকার শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেল থেকে মা-শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে শনিবার দিবাগত রাতের কোনো একসময় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন হলেন মা আশামণি (২০) ও তাঁর ১১ মাস বয়সী ছেলে আবদুল্লাহ আল রাফি। 

পুলিশ জানায়, বনানী এলাকার শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলে পরিচয় গোপন করে কক্ষ ভাড়া নেন আজিজুল হক। সেখানে শিশু পুত্রসহ স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এরপর সন্তানের মাথা শরীর থেকে আলাদা করে একটি ব্যাগে ভরে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়। সেই মাথার সন্ধান করছে পুলিশ। 

আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে কক্ষে রেখে পালানোর সময় সেনা সদস্য আজিজুল হককে (২৪) আটক করা হয়েছে। সে বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউটনগর গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে। সেনা সদস্য হিসেবে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত আছেন। তাঁর স্ত্রী আশামণি বগুড়া শহরের নারুলী তালপট্টি এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে এবং তাঁদের শিশু পুত্র আব্দুল্লাহেল রাফী। 

আটক সেনা সদস্য আজিজুলের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম  বলেন, আবাসিক হোটেল কক্ষে শনিবার রাতে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করে আজিজুল। পরে রাত নয়টার দিকে সন্তানের মাথা কেটে একটি ব্যাগে করে নিয়ে হোটেল থেকে হয়ে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়। তার দেয়া তথ্যে সেই মাথার সন্ধান করছে পুলিশ। 

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত ডিআইজি ও বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন,  ধারণা করা হচ্ছে আজিজুল হক পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল বলেছে, দাম্পত্য কলহের কারণে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

নিহত আশামণির বাবা আসাদুল ইসলাম সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, তিন বছর আগে আজিজুলের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয়। সন্তান প্রসবের আগে থেকেই আশামণি তার বাবার বাড়িতে থাকে। জামাই দুই মাসের ছুটিতে বাড়ি এসেছে। রোববার তার কর্মস্থলে চলে যাওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার জামাই তার বাড়ি যায়। সেখানে দুই দিন থাকার পর শনিবার বিকেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরে মার্কেট করার জন্য বের হয়। 

বনানীর শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, শনিবার রাত ৯টার দিকে আজিজুল নিজেকে মিরাজ এবং তার স্ত্রীকে তমা এবং তাদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ পরিচয় দিয়ে হোটেলের ৩০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আজিজুল কক্ষ ছেড়ে দেবে বলে ভাড়া পরিশোধ করতে চান। তাঁর স্ত্রী-সন্তান কোথায় জানতে চাইলে তারা সকালে চলে গেছে বলে জানায়। ওই কক্ষ দেখে বুঝে নেওয়ার কথা বললে আজিজুল তালবাহানা শুরু করে। ম্যানেজার চাপাচাপি করলে একপর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন আজিজুল। তখন বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।

আটকের পর আজিজুল পুলিশকে জানায়, শনিবার স্ত্রী আশামণি ও সন্তান রাফিকে নিয়ে মার্কেটে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর স্ত্রী-সন্তানকে রিকশাযোগে পুনরায় বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরিকল্পিতভাবে আবাসিক হোটেলে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সন্তানসহ স্ত্রীকে সেখানে ডেকে নিয়ে যায়। ওই কক্ষে আশামণি ও শিশু পুত্রকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে আজিজুল। সন্তানের মাথা শরীর থেকে আলাদা করে একটি ব্যাগে ভরে হোটেল থেকে বের হয়ে পাশেই করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়।  

সর্বাধিক জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ