
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বাজেটে নতুন করে কর আরোপের যেসব প্রস্তাব এসেছে, তাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জীবন আরো দুঃসহ হয়ে উঠতে পারে।
আগামী বাজেটের প্রধান লক্ষ্য মূল্যস্ফীতির রাশ টেনে ধরা। অর্থাৎ সীমিত আয়ের মানুষ যেন সহনীয় দামে নিত্যপণ্য কিনতে পারে, কিংবা আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জীবনযাপন করতে পারে- এমন আশার কথা শুনিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে আগামী বাজেটের সঙ্গে কি তাল মেলাতে পারবে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা? প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রীর প্রত্যাশা আর বাস্তবতার মাঝে বেশ দুরত্বই দেখছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষরা।
বিষয়টি নিয়ে রাজধানীর এক বাসিন্দা বলেন, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের ব্যালেন্স করতে পারি না। মাস শেষে সবসময় এমনিতেই ঘাটতি থেকে যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের যে ঊর্ধ্বগতি, বাজেটে সেই বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।
বাজেটে গুঁড়ো দুধের দাম কিছুটা কমবে। এর বাইরে দাম বৃদ্ধির তালিকা বেশ বড়। যার অধিকাংশ পণ্যের ভোক্তা নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষ। বাড়তি খরচ গুণতে হবে বিনোদন পার্কে গেলেও। আইসক্রিম, ফলের জুস, বৈদ্যুতিক বাতি, ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় পণ্য আছে দাম বৃদ্ধির তালিকায়। মোবাইলে কথা বলা এবং ইন্টারনেটেও বাড়তি দামের বোঝা বইতে হবে নাগরিকদের।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনী খাদ্য পণ্যে তো কর থাকার কথা না। রাখাও উচিত না। উন্নত দেশে এটি থাকে না। প্রক্রিয়াজাত বা উচ্চমূল্যের পণ্য হলে সেটি অন্য হিসাব। সাধারণ মানুষ যেটা কিনবে সেসবে কর থাকা উচিত না। এসব পণ্যে কর বাড়ালে সাধারণ মানুষ কী করবে?
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যপক আইনুল ইসলাম বলেন, যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এতে মানুষের খরচ কমাবে না। অনেক ক্ষেত্রে খরচ আরো বাড়তে পারে। ডলারের দাম বেশি, আমদানি পণ্যের ইমপোর্ট খরচ সবমিলিয়ে খরচ আরো বাড়া ছাড়া কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও আমদানি শুল্কসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপরে যে উৎস কর আছে সেসবে কাটছাঁট করা দরকার। তাহলে নিম্নমধ্যবিত্তরা কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন।
নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য বাজেটে তেমন কোনো সুরক্ষা নীতি নেই উল্লেখ করে উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক ড. আবদুল্লাহ নদভী বলেন, বাজেটে নতুন সংকট মোকাবিলার জন্য নতুন সামাজিক কর্মসূচি রাখা হয়নি। এতে নিম্নমধ্যবিত্তরা বিপদে পড়বে। এমনকি মধ্যবিত্তরাও বিপদে পড়বে। কারণ তাদের সঞ্চয় ক্ষয় হবে।